গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়-ও রক্ত বাড়ে
প্রিয় পাঠক গর্ভাবস্থায় সব খাবারগুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ার চেষ্টা করবেন। গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় ও রক্ত বাড়ে। গর্ভবতী মহিলারা প্রতিদিন ৩-৪টি সতেজ ফল খেতে পারবেন। তবে এসব খাবার আগে পুষ্টি বিশেষজ্ঞ অথবা ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
প্রেগনেন্সির সময় অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে এ সময় প্রয়োজন গাড়ো সবুজ শাকসবজি ও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল যেমন কমলা, ডালিম, অ্যাভোকাডো,বেদেনা, আপেল, আঁতা, আম, পেয়ারা ও স্ট্রবেরি এইসব খাবারে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান ও আয়রন আছে।
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন যুক্ত খাবারের পাশাপাশি সুষম খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। আপনার খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর সব খাদ্য রাখলে আপনার এবং আপনার সন্তানের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে। প্রেগনেন্সির সময় ভিটামিন ও খনিজযুক্ত খাদ্য উপাদান বেশি বেশি খেতে হবে এ সম্পর্কে জানতে আরও পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
আমাদের গায়ের রং ফর্সা করে ২০টি জেনেটিক হরমোন। ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে আমরা যারা বসবাস করি আমাদের গায়ের রং coloured skin বা ব্রাউন হয়ে থাকে। এই সময় মা সন্তান জন্মদান দেওয়ার আগে চিন্তা করে
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধের গোপন উপকারিতা
যে আমার সন্তান যেন সুস্বাস্থ্য ও ফর্সা রং নিয়ে পৃথিবীতে জন্মলাভ করে। আর এজন্য প্রয়োজন অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের। যেসব খাবার খেলে সন্তান ফর্সা হয় সেগুলো হলোঃ
- এই সময় বেশি বেশি দুধ পান করা প্রয়োজন দুধ খেলে শিশুর শারীরিক গঠন সুস্বাস্থ্যপূর্ণ ভাবে হয় এবং ত্বকের রং ফর্সা হয়।
- এই সময় নারিকেলের সাদা শাঁষ খেলে গর্ভের শিশুর গায়ের রং ফর্সা হয়। তবে অনেক বেশি মাত্রায় নারিকেল খাওয়া গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করে নারিকেল খাবেন।
- চেরি ফল ও বেরি ফলে অনেক বেশি মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এজন্য এই সময় এই ফলগুলি খেলে শিশুর ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের ক্ষতির রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- বিভিন্ন মতবাদে দেখা যায় এই অবস্থায় দুই থেকে তিন মাসের সময়কালে ডিমের সাদা অংশ খাওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে গোটা ডিম মায়ের জন্য বেশি উপকারী।
- এই সময় টমেটো খেলে এর মধ্যে থাকা লাইকোপেইন উপাদান ক্ষতিকারক আল্ট্রাভায়োলেটরি এর বিরুদ্ধে লড়াই করে সূর্যের আলোর ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে ।
- খাবারের উপরে সন্তানের গায়ের রং কেমন হবে তা নির্ভর করে না এটি পুরোপুরি নির্ভর করে তার বাবা-মার উপরে কারণ বাবা-মার কাছ থেকে যে জ্বীন পাওয়া যায়। এটিই প্রধান কারণ যে বাচ্চার গায়ের রং কেমন হবে।
- অনেক গবেষণা থেকে জানা যায় যে এই অবস্থায় যেসব মায়েরা নিয়মিত খাবারের সাথে ঘি খেয়ে থাকে তাদের প্রসব বেদনা অনেক কম হয়। এবং শিশুর ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এজন্য তেল ছেড়ে দিয়ে ঘি খান বেশি বেশি।
- গর্ভকালীন সময়ে শুকনো বা ভেযানো আমন্ড বাদাম খেলে আমাদের সন্তানের গায়ের রং ফর্সা হয়। এ সময় দুধের সঙ্গে বাদাম মিক্স করে খেলে শিশুর গায়ের রং উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে সাহায্য করে। তাই বেশি বেশি এই উপাদানটি খাবেন।
- বাহ্যিক সৌন্দর্য যে একটা মানুষের প্রধান গুণ তা কিন্তু নয়। আমরা সকলেই চাই যে আমাদের মাতৃগর্ভের ছোট্ট শিশুগুলো ফর্সা রং নিয়ে পৃথিবীতে আসে কিন্তু এই সৌন্দর্যয় প্রধান বিষয় না বাচ্চার সুস্বাস্থ্য শরীর নিয়ে এবং মেধাবী হয়ে যেন এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে সে বিষয়ে লক্ষ্য করতে হবে এজন্য এই অবস্থায় প্রতিনিয়ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এতে করে আপনার সন্তান এবং আপনি অনেক ভালো থাকবেন।
- চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ভাষায় গর্ভকালীন মায়ের পেটের মধ্যকার বাচ্চা। তার মার সব কথা শুনতে পায় এজন্য এই সময় বেশি বেশি কোরআন ও হাদিস পড়ুন। আল্লাহর ইবাদতে বেশি বেশি মশগুল থাকুন এবং বাচ্চার সাথে বেশি বেশি কথা বলুন। এ অবস্থায় আপনার সব কথা আপনার সন্তান শুনতে।
ও রক্ত বাড়ে
গর্ভবতী মহিলাদের কি খেলে রক্ত বাড়ে এ বিষয়ে নিচে আলোচনা কর হল। প্রেগনেন্সির সময় নারীদের সঠিক নিয়মকানুন না জানা থাকলে শরীরে কখন রক্ত বৃদ্ধি করতে হয় এ বিষয়ে বুঝতে পারে না। প্রথম ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টার এর সময় শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে হয়। সঠিক ও সুন্দরভাবে সন্তান প্রসবের জন্য নিচের পরামর্শ গুলো জেনে নিন।
আরও পড়ুনঃ ত্বীন ফলের ১০টি গোপন উপকারিতা
গর্ভকালীন সময়ে অল্প কিছু চেষ্টার ফলশ্রুতিতে আপনি আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারবেন। সেজন্য সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে প্রতিদিন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান শরীরের প্রিমিউটিসিয়ান ভিটামিন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই অবস্থায় শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার প্রধান উপায় হচ্ছে আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হবে ।
এই উপাদান গুলির মধ্যে রয়েছে চর্বিহীন মাংস, সবুজ শাকসবজি, মসুর ডাল, মটরশুঁটি , আয়রন ফর্টিফাইড যুক্ত দানাশস্য। নিয়মিত ডায়েটে পরিমিত পরিমাণে আয়রন না পেলে এর বিকল্প হিসেবে আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন ।
- এই অবস্থায় সঠিক ঘুম ও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে নারীরা তাদের পারিবারিক কাজগুলোকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে এজন্য তাদের শরীরে সঠিক যত্ন নেয়ার সময় খুব কম পায়। এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যে নিয়মিত রাতে ৪ ঘণ্টা করে ঘুমাতে হবে।
- ফলিক অ্যাসিড পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন এটি নিউট্রিউক তৈরি করার জন্য সাহায্য করে। যা শিশুর মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ডের জন্মগত ত্রুটি বা বিকলাঙ্গতা প্রতিরোধ করে ।
- এই সময় বেশি বেশি ডিম খাওয়া প্রয়োজন ডিমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ও আয়রনের প্রধান উৎস যা আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- সবুজ শাকসবজি আয়রনের পাওয়ার হাউস প্রেগনেন্সি সময় বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি খাবেন। এতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
- নাগেট বিজে বিদ্যমান রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে আয়রন। এর মধ্যে রয়েছে সূর্যমুখী বীজ কুমড়োর বীজ শিমের বীজ এই জন্য ডায়েটে বেশি বেশি নাগেট বিজ খান।
গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ সঠিক নিয়ম জানুন
প্রেগনেন্সির সময় গর্ভবতী মহিলাদের ভারী কাজকর্ম না করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তারগন। তবে নিয়মিত হাঁটাচলা ও ঘরের অতি সাধারণ কাজ গুলো করতে বলেন কারণ এতে শরীর এক্টিভ থাকে এবং সন্তান প্রসবের সময় শারীরিক কষ্ট অনেক কম হয়। গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ সঠিক নিয়ম জানুন।
- এ অবস্থায় শাকসবজি কাটা ও ধোয়ার কাজ করতেই পারেন আপনারা। কিন্তু বেশি সময় ধরে সবজি কাটা যাবেনা দাড়িয়ে থেকে । ও মাটিতে বসে বটি নিয়ে সবজি কাটা নিষেধ।
- ঘরের ভেতরে চেয়ার বা টুলে উঠে যে ধরনের কাজ করতে হয় যেমন সিলিং ফ্যান পরিষ্কার করা জানালায় পর্দা টাঙানো এই ধরনের কাজগুলো করবেন না। কারণ উঁচু জায়গা থেকে পড়ে গেলে আপনার এবং আপনার সন্তানের অনেক ক্ষতি হতে পারে।
- পোষা প্রানীর বর্জ্যে রয়েছে টক্সপ্লাজমা গণডি নামক এক ধরনের ভাইরাস। যা আপনার এবং আপনার গর্ভের সন্তানের বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। ঘরে একান্তই কেউ না থাকলে আপনি অনেক প্রটেকশন নিয়ে যেমন হাতে গ্লাভস ও মুখে মাস্ক নিয়ে এই বর্জ্য পরিষ্কার করবেন কাজ শেষে হাত ভালো করে সাবান দিয়ে বা স্যানিটাইজেশন করে নিবেন।
- ঘরের ভিতরে ভারী কোন আসবাবপত্র যেমন খাট শোকেস ড্রেসিং টেবিল ওয়ারড্রব ইত্যাদি আসবাবপত্র ঘরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানোর চেষ্টা করবেন না এতে আপনার এবং গর্ভের শিশুর উভয়ের অনেক ক্ষতি হতে পারে।
- প্রেগনেন্সির সময় প্রথম কয়েক মাস সব কাজগুলো পাতলা করা যাবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে পেটের উপরে যাতে কোন চাপ না পড়ে । এ ধরনের কোন কাজ করবেন না যাতে আপনার মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হয়। এই সময় বেশি বেশি হাসিখুশি ও টেনশন ফ্রি থাকার চেষ্টা করবেন আপনার মন বেশি বেশি মানসিক প্রশান্তি পায় এ ধরনের কাজগুলো করবেন ।
- এই সময়ে আপনারা কাঁচা মাছ-মাংস বা আদা সিদ্ধ কোন কিছু যেমন ডিম মাছ ও মাংস খাবার থেকে বিরত থাকবেন। প্রেগনেন্সির সময় স্নাক্স সি ফুড , আন পাস্তুরাইজড ডেইরি আইটেম যুক্ত খাবার কোনভাবেই খাওয়া ঠিক না । এই সময় আপনারা বেশি বেশি ডায়েটে খাবেন সবুজ শাকসবজি, পুষ্টিকর বেশি বেশি ফল, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি।
- এই সময়ে অনেক ধরনের ছোটখাট রোগ যেমন মাথা ব্যাথা সর্দি কাশি জ্বর হলে আমরা নিজেরাই ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে খেয়ে থাকি। কিন্তু এই কাজটি একেবারে সঠিক না। এই সময় ছোট বড় যে কোন ধরনের সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। নইলে আপনার এবং আপনার সন্তানের বড় ধরনের রোগ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
- গর্ভাবস্থার সময় কালে আধুনিক চিন্তা চেতনার নারীরা অনেক সময় হট ট্যাব বাথ ট্যাব ও সোনা বাথে রিলাক্সে গোসল করে মানসিক স্ট্রেস কমানোর জন্য কিন্তু এই কাজটি মোটেও ঠিক না এতে আপনার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে আপনার গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ১০টি খাবার খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
প্রেগনেন্সির সময় গর্ভবতী নারীদের প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে এর ফলে বাচ্চার ব্রেন ডেভেলপমেন্ট এবং ভালো মস্তিষ্ক ও সুস্বাস্থ্য নিয়ে পৃথিবীতে জন্ম লাভ করবে। গর্ভাবস্থায়ী ১০টি খাবার খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়। সেসব খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আজকে আপনাদের জানাবো। যেসব খাবারের মধ্যে প্রোটিন রয়েছে সেগুলো হলো
মাছ মাংস ডিম সিড ফুড ও পাঁচ মিশালি ডাল এবং শুকনো ফল কলা সবুজ শাকসবজি ও পুদিনা পাতাতে অনেক বেশি ফলিক অ্যাসিড ও আইরন রয়েছে যা আপনার শিশুর ব্রেইন বুদ্ধি বাড়াতে সহায়তা করে। প্রেগনেন্সির সময় গুরুত্বপূর্ণ ডায়েট পালন করতে হয় গর্ভবতী মা কে কারণ এই সময় আরো বেশি বালেন্সড হতে হবে।
গর্ভবতী মায়েদের পেটের মধ্যে সন্তানের ২৫% ব্রেনের বিকাশ হয় এজন্য এই সময় বেশি বেশি নিয়ম তান্ত্রিক খাদ্য অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ সময়ে বেশি বেশি দুধ ডিম মাছ খেতে হবে আপনাদের। বাদাম ছোট বড় সব বয়সী মানুষের চোখের আইকিউ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শিশু জন্ম লাভের পর বাকি ৭৫% ব্রেন ডেভেলপমেন্ট গঠিত হয়।
যেটি আপনার বাচ্চার আইকিউ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বাচ্চার বয়স ৬ মাস হওয়ার পরে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের সাথে যেমন সুজি সাগু ও সেমাই এর মধ্যে বাদাম গুড়া মিক্স করে খাওয়াতে হবে তাহলে বাচ্চা অনেক বেশি বুদ্ধিমান হবে ।
ডিমের কুসুমের মধ্যে প্রোটিন ও পোলিন রয়েছে যা আপনার শিশুর ব্রেইন এর নিউরো ট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করবে। এ সময় মুরগির মাংস খাওয়ার থেকে ছোট মাছ বেশি খাওয়াবেন। এবং ছোট থেকে নিয়মিত এক চামচ করে ঘি সপ্তাহে এক থেকে দুইবার আপনার বাচ্চাকে খাওয়াবেন এতে আপনার বাচ্চার ব্রেনের বিকাশের ক্ষমতা অনেক বেশি দৃঢ় হয়।
- গাড়ো সবুজ শাকসবজি যেমন বাঁধাকপি ব্রকলি পালং শাক গাজর টমেটো বিনোস নিয়মিত আপনাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে এগুলোতে রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে লুটেইন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। প্রেগনেন্সির সময় কালো জাম ও বাদাম খেতে পারেন এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শিশুর স্মৃতিশক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- গরুর মাংস ও কলিজা পনির জাতীয় খাবার খেতে হবে বেশি পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন ডি। গর্ভকালীন সময়ে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে আপনার শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি হয়। আর সেজন্য আপনাকে এই সময় ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার তে হবে এবং নিয়ম করে সূর্যের আলোয় কিছু সময় বসে থাকতে হবে। নিয়মিত খাবারের সঙ্গে দুধ ও দই খেতে হবে।
- আপনার সন্তানের ব্রেইনের বিকাশের জন্য আয়োডিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও কলিজা ডিম মাছ গলদা চিংড়ি ভুট্টা ও সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি আছে।
- এই সময় বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি খেতে হবে পালং শাক লাল শাক কলমি শাক পাতাবহুল আরো অন্যান্য শাক সব ধরনের ড্যালের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড আছে। আর ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ভিটামিন বি ১২ এর সাথে খেতে হবে ।
- বেরি জাতীয় খাবার যেমন ব্ল্যাকবেরি রাস্পবেরি স্ট্রবেরি ব্লুবেরি টমেটো কালোজাম বিনোস ও আর্টিচোক্কস এই সমস্ত গাছের ডাটা ও ফল খাওয়া যেতে পারে।
- প্রেগনেন্সি সময় আপনার শরীর অনেক বেশি পরিমাণে পরিশ্রম করে আপনার বাচ্চার স্নায়ু কোষগুলো সঠিকভাবে গঠন করার জন্য। আর সেজন্য প্রয়োজন আপনার বাড়তি কিছু প্রোটিন এ সময় আপনাকে প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে এর মধ্যে মধ্যে দই অন্যতম এছাড়াও ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।
- ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এসব খাবার আপনার শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা ও ব্রেইন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায় যে প্রেগনেন্সির সময় যেসব মহিলারা সপ্তাহে দুইবারের কম মাছ খেয়েছে তাদের সন্তানের আইকিউ মাত্রা অনেক কম। এবং সপ্তাহে দুবারের বেশি যেসব মহিলারা মাছ খেয়েছে তাদের বাচ্চার আইকিউ মাত্রা অনেক বেশি।
- এই সময় পুদিনা পাতার শুকনো ফল কলা সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি খাবার বেশি বেশি খেতে হবে এসব খাবারে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড রয়েছে। এজন্য এসব খাবার খেলে এই সময়আপনার শিশুর ব্রেন বুদ্ধি বৃদ্ধি করে এবং ব্রেনের সুস্বাস্থ্যতায় কাজ করে ।
- আমন্ড বাদাম স্নেহ পদার্থ জাতীয় খাদ্য এর মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম প্রোটিন ভিটামিন ই ও অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এজন্য এ সময় এক মুঠো করে আমন্ড বাদাম খেলে আপনার শিশু অনেক বুদ্ধিমান হিসেবে জন্ম লাভ করবে এই পৃথিবীতে। এছাড়াও আখরোট ও মটরশুঁটি তে অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে জানুন
প্রেগনেন্সির সময় গর্ভবতী মায়েদের নিজের এবং বাচ্চার সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হয়। এ সময় ভুলভাল কোন খাবার মোটেও খাওয়া ঠিক না এতে আপনার এবং আপনার শিশুর উভয়ের জন্য অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই সময় আপনার গর্বের বাচ্চাটির সুস্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে
আর এই বিশেষ গুরুত্বের মধ্যে রয়েছে আপনার খাদ্য অভ্যাস। এই সময় বেশি বেশি সুষম খাদ্য খাওয়া প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবেনা সেই সম্পর্কে জানুন।
- এই সময় আধা সেদ্ধ কোন খাবার যেমন মাছ-মাংস ডিম, ইত্যাদি খাবার খাওয়া যাবে না। কারণ এইসব খাবার গুলোতে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া যেমন সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া, ও লিস্টেরিয়া থাকে যা এই অবস্থায় খেলে গর্ভপাতের মত ভয়ানক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য এই খাবারগুলো অনেক সময় ধরে রান্না করে খেতে হবে। হাফ বয়েল ডিম ডিমের পোচ মাছ মাংস আধা সিদ্ধ অবস্থায় একদমই খাওয়া ঠিক হবে না এবং এই সময় কাঁচা পেঁপে ও আনারস কোনভাবেই খাবেন না এতে আপনি ও আপনার বাচ্চার অনেক ক্ষতি হতে পারে ।
- প্রেগনেন্সির সময় যেমন চকলেট কফি চা ইত্যাদি খাবারগুলো খেলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
- এই সময় সামুদ্রিক মাছ অনেক কম পরিমাণে খাবেন। এ সময় বেশি বেশি মিঠা পানির মাছ খাবেন। কেননা সামুদ্রিক মাছে অনেক বেশি পরিমাণে পারদ থাকে যা আপনার ভ্রূণের মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে ।
- এই সময় হারাম কোনো খাবার যেমন মদ্যপান বিশেষ কোন ড্রিংকস এবং ধুমপান একদমই খাওয়া যাবেনা। কারণ এই সময় প্রতিদিন মদ্যপান করলে আপনার গর্বের শিশুর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন হার্টের সমস্যা বিকলঙ্গ তার সমস্যা শিশুর বুদ্ধি কম হওয়ার মত সমস্যা তৈরি হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত জেনে নিন
গর্ভকালীন সময়ে আপনাদের অনেক বেশি বেশি প্রোটিন যুক্ত খাবারের সাথে প্রোটিন যুক্ত ফলও খেতে হবে।। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত জেনে নিন ঃ
- কমলাতে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এজন্য এটি গর্ভবতী মায়েদের অনেক পছন্দের একটি খাবার এতে বিদ্যমান রয়েছে ফোলেট ও চর্বি যা অনেক স্বাস্থ্য উপকারী এটি ভুলের মস্তিষ্ক সুস্থ ও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- প্রেগনেন্সির সময় অনেক বেশি পরিমাণে কলা খাওয়া প্রয়োজন কারণ এতে আছে অনেক বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ উপাদান এবং প্রয়োজনীয় সব খাদ্য উপাদান। এ সময়ে কলা আপনাদের জন্য ভীষণ উপকারী। এটি খেলে রক্তস্বল্পতা ও হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা কম হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কলা স্মুদি সহ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়।
- তরমুজ একটি জলীয় ফল এর পুষ্টি উপাদান অনেক বেশি। এটি আপনাদের শরীর থেকে দূষিত ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং শরীর আর্দ্র রাখে। এটি আপনাদের শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এজন্য এই অবস্থায় তরমুজ খাবেন। তবে খেয়াল রাখবেন খুব বেশি মাত্রায় তরমুজ খেলে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- আপেল সারা বছর বাজারে পাওয়া যায় । এতে বিদ্যমান রয়েছে পটাশিয়াম লৌহ ও আঁশ সমৃদ্ধ উপাদান যা আপনার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে। কলার সঙ্গে আপেল কুচি করে সালাদ করে খাওয়া যায়।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফল রয়েছে যেগুলো এই অবস্থায় খাওয়া একদমই ঠিক না এগুলোর মধ্যে হল
- আনারস
- কাঁচা পেঁপে
- আঙ্গুর
- হিমায়িত ফল
- ও এলার্জিযুক্ত ফল তেঁতুল, টমেটো, বাঁতাবি লেবু
ডায়াবেটিস আক্রান্ত মহিলাদের প্রেগনেন্সির সময় কলা খাওয়া ঠিক হবে না
লেখকের মন্তব্য
সন্তান জন্মদানের আগে আমরা সকলেই চাই যে আমার সন্তান যেন গায়ের রং ফর্সা নিয়ে জন্ম লাভ করে এবং তার ব্রেন বুদ্ধি অনেক ভালো হয়। এসব বিষয় একমাত্র আল্লাহর হাতে আপনার সন্তান কাল হোক বা ফর্সা সেটা কোন মূল্যবান কথা নয় আপনি তার মা-বাবা এটাই সব থেকে বড় কথা। এজন্য সমাজের কুপ্রবৃত্তির লোকজনের কথা শুনে আপনার সন্তানকে কখনোই অবহেলা ও অবজ্ঞা করবেন না। কারণ আপনার ছোট্ট একটু অবহেলায় আপনার শিশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url