সেন্টমার্টিন দ্বীপের দর্শনীয় স্থান-ইনানী বিচ কোথায় অবস্থিত


প্রিয় পাঠক সেন্টমার্টিন দ্বীপের দর্শনীয় স্থান ও ইনানী বিচ কোথায় অবস্থিত সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক সাগরের নীল পানি ও প্রাকৃতিক জীববৈচিত্রৈর অপরূপ সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষিত করে এই সমুদ্র সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্যের সাক্ষী হওয়ার জন্য প্রিয় মানুষের হাত ধরে সমুদ্র সৈকতে বসে থাকার অনুভূতিটাই অন্যরকম
সেন্টমার্টিন দ্বীপের দর্শনীয় স্থান
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ৬৬ প্রজাতির প্রবাল আছে ও ২৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ১২০ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এটি আমাদের দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। এর চারদিকে বয়ে চলে নীল জলরাশির ধারা এখানকার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে টাঙ্গুয়ার হাওর সব থেকে অন্যতম।

ভূমিকা

ভূপ্রকৃতির প্রধান সমতল সেন্টমার্টিন দ্বীপ হালকা কিছু বালিয়াড়ি দেখা যায় এই দ্বীপের গঠনের প্রধান উপাদান চুনাপাথর। মিশ্র নোণা জলের মাছ জেলিফিশ কচ্ছপ ও প্রবাল এই দ্বীপের পর্যটকদের বেশি আকর্ষিত করে । এছাড়াও নীল সমুদ্রের তীরে রয়েছে সারি সারি নারকেল গাছ যার সাথে সমুদ্রের অস্থির ঢেউ মানুষের মনকে করে তোলে প্রশান্তিময় এ সম্পর্কে আরও পড়ুন।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের দর্শনীয় স্থান 

আমাদের দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ হিসেবে ধরা হয় সেন্টমার্টিন কে। আন্তর্জাতিকভাবে এই দ্বীপটি সেন্টমার্টিন নামে পরিচিত চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার টেকনাফের নাফ নদীর তীরে অবস্থিত 

এই দ্বীপটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৮ বর্গ কিলোমিটার এই দ্বীপে আকাশ ও সমুদ্রের নীল মিশে গেছে এই দ্বীপের মাঝখানে আরও একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ আছে যার নাম ছেড়াদ্বীপ। সেন্টমার্টিন দ্বীপটি জেলিফিশ কচ্ছপ মিশ্র নোনা জলের মাছ চুনা পাথর ও প্রবালের জন্য বিখ্যাত এই দ্বীপে রয়েছে ১৮৭ প্রজাতির শামুক, ঝিনুক

  • ১৫৩ প্রজাতির শৈবাল ৬৬ প্রজাতির প্রবাল ১৫৭ প্রজাতির গুপ্তজীবী উদ্ভিদ ১২০ প্রজাতির পাখি ২৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং যার প্রজাতির উভচর প্রাণী এই দ্বীপে দর্শনীয় স্থান সমূহ
  • ছেঁড়া দ্বীপ আমাদের দেশের দক্ষিণের শেষ অংশের স্থলভাগ
  • কোরাল দ্বীপের অবস্থান পশ্চিম পাশে
  • বাজারের পাশে রাস্তা ধরে হাঁটলে দেখা যায় স্থানীয়দের বাসস্থান ও জীবন ধারণের জায়গা অবকাশ হোটেল পর্যন্ত
  • জেটি থেকে নেমে বাম পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটলে দেখা মিলে উত্তর পাশের নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ

সেন্ট মার্টিনে থাকার উল্লেখযোগ্য হোটেলগুলি হল

  • অবকাশ
  • প্রাসাদ প্যারাডাইস
  • ব্লু মেরিন
  • নীল দিগন্ত রিসোর্ট
  • লাবিবা বিলাস রিসোর্ট
  • ড্রিম নাইট রিসোর্ট
  • সমুদ্র বিলাস (হুমায়ুন আহমেদ)

ইনানী বিচ কোথায় অবস্থিত

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলা থেকে ২৩ কিলোমিটার ও হিমছড়ি থেকে ১৪ কিলোমিটার ইনানী সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মত ইনানী দ্বীপে ও দেখা মিলে ভাটার সময় এই দ্বীপে কক্সবাজারের মত সাগর অনেক বেশি উত্তাল থাকে না আর এই দৃশ্যটি ভ্রমণ পিয়াসু মানুষদের আকর্ষিত করে। ইনানি সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের আদর্শ সময় বিকেল বেলা 
 
এই সময় পর্যটকদের ভিড় অনেক কম থাকে তার সাথে নিদারুণ সূর্যাআস্ত দেখার অনুভূতি মিস করলে পরবর্তীতে অনেক মন খারাপ হতে পারে ইনানী বিচ যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাদের ঢাকা আসতে হবে এখান থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের জন্য বিভিন্ন ধরনের এসি নন এসি বাস আছে এদের মধ্যে বিখ্যাত কয়েকটি বাস সার্ভিস হলো 

সেন্টমার্টিন হুন্দাই এসব অনেক ধরনের বাস সার্ভিস পাওয়া যায়। বাসের কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে আপনি ভিন্ন ভিন্ন খরচে এইসব স্থানে যেতে পারবেন । এই বিচ সম্পর্কিত ছোট ছোট কিছু টিপস
  • ডিসেম্বর মার্চ মাসের ছুটির দিনগুলি ছাড়া অন্য দিনগুলোতে গেলে আগে থেকে হোটেল বুক দেওয়ার প্রয়োজন নাই
  • ইজিবাইক বা রিকশাচালকেরা হোটেল রুম ভাড়া করে দেওয়ার কথা বলবে তাদের কথা শুনবেন না
  • অফিস সিজনে ছুটির দিনগুলোকে ভ্রমণের জন্য পরিহার করবেন এই সময় খরচ অনেক বেশি হবে
  • কোথাও যাওয়ার জন্য আগে ভালো করে চালকের সঙ্গে ভাড়া নির্ধারণ করে নিবেন নইলে পরে ঝামেলা হবে
  • বিকেলবেলা ইনানী বিচে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন
  • হাতে একটু বেশি সময় নিয়ে বের হওয়া ভালো পথের মধ্যে মেরিন ড্রাইভ এবং হিমছড়িতে অল্প কিছু সময় দাঁড়াতে পারেন

কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি 

বাংলাদেশের ও সারা পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ও পর্যটন কেন্দ্র অপরূপ সৌন্দর্যের জেলা চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম হতে ১৫২ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে ৪১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সমুদ্র সৈকত বাদেও এই জেলায় অনেক দর্শনীয় স্থান আছে কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি 

যেমন সুগন্ধা বিচ, লাবনী বিচ, কলাতলী বিচ, হিমছড়ি, ইনানী বীচ, সেন্টমার্টিন, মেরিন রোড, রামু বৌদ্ধ বিহার, কুতুবদিয়া দ্বীপ, সোনিয়া দ্বীপ, ও মহেশখালী।

কক্সবাজারে দেখার জন্য সেরা ১০টি স্থান

সারা পৃথিবীর ও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হচ্ছে কক্সবাজার। এই সমুদ্র সৈকতের বিশেষত্ব হল পুরো ১২০ কিলোমিটার এরমধ্যে বালুকাময় কর্দমাক্ত নেই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য এখানে রয়েছে অনেক ধরনের ভি আই পি এবং সাধারণ মানের হোটেল মোটেল রেস্টুরেন্ট ও কটেজ

বছরের ছয়টি ঋতুর মধ্যে শীত গ্রীষ্ম বর্ষা বসন্ত সবগুলো সিজেনেই এর সৌন্দর্য বদলায় আর যা পর্যটকদের আরো বেশি আকর্ষিত করে। কক্সবাজারে দেখার জন্য সেরা ১০টি স্থান হলোঃ
  • প্রথমেই আসবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যা বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত
  • আমাদের দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যা আমাদের দেশের মূল ভূখণ্ডের সর্ব দক্ষিণে অবস্থানরত কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত
  • কক্সবাজার জেলার একটি দ্বীপ হচ্ছে মহেশখালী উপজেলা কক্সবাজার থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত
  • কক্সবাজার জেলা শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হিমছড়ি দ্বীপ কক্সবাজার গেলে হিমছড়ি দ্বীপে অবশ্যই যাবেন কারণ এই দ্বীপের সৌন্দর্য অনেক বেশি
  • শাহপরীর দ্বীপ অবস্থিত বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সর্ব দক্ষিনে এটা টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম
  • সোনিয়া দ্বীপ অবস্থিত কক্সবাজার মহেশখালী উপজেলার ৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে ক্যাম্পিং করে থাকার জন্য আদর্শ একটি জায়গা
  • আমাদের দেশের সর্ব দক্ষিণ ভূখণ্ডে অবস্থিত প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন এই দ্বীপ থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দক্ষিনে ছেড়া দ্বীপের অবস্থান
  • রামু উপজেলার পাহাড় ও সমতলের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী রাবার বাগান কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত
  • লামাপাড়া খিয়াং কক্সবাজার জেলার ফতে ক্ষারকুল ইউনিয়নের রামু চৌমুহনী বাসস্ট্যান্ড হতে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বাকখালি নদীর তীরে অবস্থিত

কক্সবাজার বিচের নাম

প্রিয় মানুষের হাত ধরে সমুদ্র সৈকতে বসে থাকার অনুভূতিটাই অন্যরকম এই সমুদ্র সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্যের সাক্ষী হওয়ার জন্য কক্সবাজার বিচের নাম এরমধ্যে ইনানী লাবনী পয়েন্ট ও হিমছড়ি সাথে আরো যুক্ত হতে পারে বেশ কিছু স্থান
  • পাটোয়ারটেক সমুদ্র বিচ ও সৈকত ইনানি বিচ হতে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জনমানবহীন কোলাহল শূন্য এই সৈকত ঘুরাঘুরির সময় আপনাদের মন প্রশান্তিতে ভরে যাবে নিজের অজান্তেই এই সমুদ্র সৈকতে অন্যতম লাল কাকড়ার যাক
  • সোহানখালি বিচ সমুদ্র সৈকতে শত শত জেলে নৌকা ও সাম্পানে ঘেরা সমুদ্র উপকূল কলাতলী থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকত দীর্ঘ সময় ধরে মাছ ধরার শেষে জেলেরা নোঙ্গর করতে আসে এই দ্বীপে
  • কলাতলী  এই দ্বীপের সৌন্দর্য এতটাই বেশি যে যে কাউকে মুগ্ধ করে তুলবে সবুজ গাছের সারি ও বালিময় পরিবেশ
  • সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পাতে কক্সবাজার থেকে প্রায় ৪০ মিনিট দূরেই অবস্থিত এই বিচ রিলাক্সে সময় কাটানোর জন্য ভি আই পি বিলাসবহুল জায়গা সুইমিং পুল বিয়ামাগার এদের আছে ৬০ হাজার বর্গফুটের নিজস্ব বেষ্টনীতে সমুদ্র সৈকত
  • মারমেইড বিচ রিসোর্ট কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মধ্যে অন্যতম একটি জনমানবহীন কোলাহলশূন্য মনমুগ্ধকর সময় কাটানোর জন্য উপযোগী একটি রিসোর্ট যা রামুতে অবস্থিত এখানে অনেক সৌন্দর্যের কিছু রেস্তোর আছে

টেকনাফের দর্শনীয় স্থান

টেকনাফ আমাদের দেশের কক্সবাজার জেলার একটি উপজেলা এটি বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত টেকনাফের দর্শনীয় স্থান সমূহ
  • টেকনাফ উপজেলার বরাং ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম এর নাম শাহপরীর দ্বীপ এটি একসময় দীপ থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধীরে ধীরে ভূখণ্ডের সাথে মিশে গেছে শাহা ফরিদ আউলিয়ার নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়েছিল এই দ্বীপটির
  • সেন্টমার্টিন এবং ছেড়া দ্বীপ টেকনাফ থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণের সর্বশেষ ভূখণ্ডের অবস্থিত টেকনাফ থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এই দ্বীপটির নাম ছেঁড়া দ্বীপ সমুদ্রের নীল ঢেউ পাথরের বুকে যখন আছড়ে পড়ে তখন এক অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে
  • টেকনাফ হতে মাত্র ১৫ কিলোমিটার উত্তরে তৈঙ্গা চুড়া গেম রিজার্ভের সর্বোচ্চ চূড়ায় অবস্থিত গেম রিজার্ভ হচ্ছে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংরক্ষিত বনাঞ্চল
  • শাপলাপুর সৈকত অনেক বেশি সময় জন মানবহীন পরিবেশ থাকে টেকনাফ শহর থেকে মেরিন ড্রাইভ শিলখালী সুউচ্চ গর্জন বনের মধ্যে দিয়ে ১০০ কিলোমিটার পথ গেলেই দেখা মিলবে নির্জনতাই ভরপুর এই সৈকতের
  • নাফ নদী মায়ানমার ও বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত নাফ নদীর বাম পাশে মায়ানমার অবস্থিত এবং ডান পাশে বাংলাদেশে অবস্থিত এই নদীর গভীরতা প্রায় ৪২০ ফুট

এছাড়াও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান আছে

  • টেকনাফ নেচার গেম রিজার্ভ
  • কুদুম গুহা
  • টেকনাফ সমুদ্র সৈকত
  • মাথিনের কূপ
  • সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক
  • শিলখালী চিরহরিৎ গর্জন বাগান
  • মারিশবনিয়া সৈকত
  • বাংলাদেশ মায়ানমার ট্রানজিট জেটিঘাট

শেষ কথা

পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এই সমুদ্র সৈকতে গড়ে উঠেছে নানা রকম হোটেল মোটেল ও কটেজ ভি আই পি রেঁস্তোরা। তবে এখানে যখন যাবেন সবকিছু সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জেনে নিবেন অনেক ধরনের চিটার বাটপার ভরপুর আছে এই পর্যটন নগরীকে ঘিরে যারা সাধারণ মানুষকে অনেক সময় বিপদে ফেলে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url