পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা-গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা


প্রিয় পাঠক এই ফল অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা হলো এই যে একটি পরিপূর্ণ এইফলে আছে অনেক ধরনের উপকারী উপাদান। এতে রয়েছে ভিটামিন সি যা মানুষের স্ট্রেস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এজন্য প্রতিদিন এইফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা
যেসব ব্যক্তিদের ব্লাডপ্রেসার হাই থাকে তাদের নিয়মিত এইফল খাওয়া প্রয়োজন কারণ এই ফলে আছে অনেক পুষ্টিগুন । এটি ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এই ফলটি মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ঔষধ হিসেবে কাজ করে।

ভূমিকা

বাজারে অন্যান্য ফলের মতো এই ফলেরও  স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনেক পুষ্টি গুন উপাদান আছে। কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে এই ফলটি খেলে অনেক ধরনের রোগের সৃষ্টি হতে পারে। এটি খাবার অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও আছে। এইফলে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার আছে যা মানুষের হজম শক্তির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এ সম্পর্কে জানতে আরও পড়ুন।

পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা

এই ফলে বিদ্যমান আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি একটি আপেল অথবা একটি কমলার থেকে এইফলে অনেক বেশি প্রায় ৪ গুণ ভিটামিন সি আছে। এবং লেবুর থেকে বেশি দশগুণ ভিটামিন এ আছে এইফলে বিদ্যমান থাকা পুষ্টিগুণ উপাদান বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ফলটি অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় 

মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধের সাহায্য করে থাকে। বিভিন্ন ফলের মতো মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য এই ফল অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তবে খুব বেশি মাত্রায় এইফল খেলে অনেক ধরনের রোগের সৃষ্টি হতে পারে এর কিছু উপকারিতা হল প্রতিদিন এই ফল খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তের লিপিড কমে যায়। কারণে ফলটিতে আছে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম। 

আর পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনের নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এজন্য প্রতিদিন লাইকোপিন যুক্ত গোলাপি পেয়ারা খাওয়ার ফলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয় । এই ফলটিতে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি লাইকোপিন ও কোয়ারসেটিন যুক্ত বেশ কিছু এন্টি অক্সিডেন্ট উপদান আছে যা মানব দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি করতে দেয় না। 

সেজন্য স্তন ক্যান্সার ও প্রোসটেট ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। মানুষের চোখের জন্য ভিটামিন এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ফলটিতে বিদ্যমান থাকা ভিটামিন এ মানুষের চোখের কর্নিয়াকে সুস্থ করে ও রাতকানা রোগ করে কাঁচা পেয়ারা তে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে এজন্য প্রতিদিন খাবারের তালিকায় এইফল রাখতে হবে।

ও অপকারিতা

গর্ভবতী ও সন্তানকে দুগ্ধ পানকারী মহিলাকে এই ফলটি বেশি খাওয়া ঠিক না এটি অনেক বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বেড়ে যায় এবং হজমে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেসব মানুষের ঘনঘন সর্দি কাশি 

রোগ হওয়ার প্রবণতা আছে তাদেরকে এই ফল না খাওয়াই ভালো। এই ফল বেশি খেলে সর্দি কাশি বেড়ে যেতে পারে। এ ফলটিতে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা মানুষের শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তবে যাদের হজম সংক্রান্ত সমস্যা আছে তাদের এই ফল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো পেট ফাঁপা বা ডায়রিয়া রোগ হলে এই ফল না খাওয়াই ভালো এতে সমস্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

এক্ষেত্রে অনেক বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন যে এইফল খেলে অনেক উপকার হয় কোন ধরনের ক্ষতি হয় না। প্রেগনেন্সির সময় অনেক ফলমূলের উপর নিষেধাজ্ঞা দেন ডাক্তাররা। 

এই ফলে বিদ্যমান থাকা ভিটামিন সি মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এই ফলে থাকা মেটাবলিজম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগ ও সংক্রমন থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এই ফল । গর্ভবতী মহিলারা এইফল খেলে তাদের হজমশক্তি বাড়তে থাকে যার ফলে বুকে জালা এবং গা গুলানো সহ 

বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করা যায়। প্রেগনেন্সি সময় মহিলাদের উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। 

যা গর্ভকালীন সময়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন করতে পারে এই সময় প্রতিদিন একটা করে পাকা পেয়ারা খেলে তাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। গর্ভাবস্থায় এই ফল খাবার জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায়

পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য

এই চুল পড়া সমস্যায় পেয়ারা পাতার উপকারিতা চুলের জন্য অনেক সময় আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে থাকি যে চুল পড়া রোধে কি কি করা যায়। এক্ষেত্রে খুশির সংবাদ হলো এই যে ঘরে বসেই চুল পড়া রোগ বন্ধ করা সম্ভব। আমাদের দেশে প্রায় সর্বত্রই এই ফল গাছ আছে 

কিন্তু এইফল গাছের পাতা মানুষের চুল পড়া রোধ ও নতুন চুল গজাতে অনেক সাহায্য কর। সবুজ রঙের এই পাতাটিতে অনেক বেশি ভিটামিন বি থাকে যার ফলে এই উপাদানটি চুলের ক্ষেত্রে অনেক স্বাস্থ্যকর ও উপকারী। এর জন্য প্রথমে কিছু সংখ্যাক এইফলের পাতা নিতে হবে ২০ মিনিট ধরে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ গরম পানিতে ফুটাতে হবে পানির রং লালচে বর্ণ ধারণ করলে 

নামাতে হবে এরপর পাতাগুলো থেকে ঠান্ডা পানি গুলো ভালো একটি বোতলে ঢেলে নিতে হবে এরপর hair টনিক এর মত প্রতিদিন চুলের গোড়ায় ব্যবহার করতে হবে এর ফলে চুল পড়া রোগ বন্ধ হবে এবং নতুন নতুন চুল গজাবে। এইফল এবং এইফলের পাতা পুষ্টিগুণের পাওয়ার হাউস পেয়ারা পাতাতে বিদ্যমান থাকা 

আন্টি ইনফ্লেমেটরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল মাথার ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে ভিটামিন সি চুলের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে কোলাজেন আরও উন্নত করে এর মধ্যে থাকা লাইকোপিন উপাদানটি সূর্যের Uv রশ্নি থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে।

পেয়ারা পাতার রসের উপকারিতা

এইফল খেতে অনেক সুস্বাদু । এই ফলের পাতায় অনেক বেশি ওষুধি উপাদান আছে যা মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতার রসের উপকারিতা সমূহ এ পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক ঔষধের কাজ করে থাকে। এই ফলের পাতা এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে 

এর মধ্যে থাকা ফোলনিক যৌগ শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের প্রতিদিন পেয়ারা পাতার চা খেতে হবে যার ফলে রক্তে শর্করার কমতে থাকবে চুল পড়া রোধে পেয়ারা পাতার রস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এজন্য প্রথমে পানিতে ফুটাতে হবে তারপর ঠান্ডা হলে পানিটি মাথায় ম্যাসাজ করতে হবে। 

এ পাতার চায়ের মধ্যে বিদ্যমান থাকে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান । যেটি ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করে পেয়ারার রস ব্রঙ্কাইটিস ও কফ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পাতার রস খেলে মানব দেহের রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমতে থাকে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। 

এই ফলের পাতায় আছে অনেক বেশি ভিটামিন ই। চুলের জন্য এটি বেশ উপকারী এ রস চুলে লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং নতুন চুল গজাতে থাকে এবং মাথার ত্বক ও চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে। নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে পেয়ারা পাতার রস চুলের যত্নে অনেক উপকারী

খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

প্রতি ১০০গ্রাম পেয়ারাতে ৩০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। এ ফলে আরো রয়েছে ক্যালসিয়াম আয়রন ও ভিটামিন বি৬। পেট ব্যথা রোগীদের জন্য পেয়ারা ভীষণ উপকারী 

খালি পেটে এই ফল খাওয়ার উপকারিতা হল এই ফলে রয়েছে অনেক ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এজন্য কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের ডাক্তাররা বেশি বেশি এইফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অতিরিক্ত গ্যাস ও এসিডিটি সমস্যা থাকলে এই ফল খাওয়া তাদের জন্য অনেক উপকারী এতে বিদ্যমান থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানুষের হৃদপিণ্ডকে 

ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। খালি পেটে এই ফল খাওয়ার ফলে পাইলস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। দুপুরের খাবারের প্রায় এক ঘন্টা পর এইফল খাওয়ার সঠিক সময়। পরিপূর্ণ আকারের একটি পেয়ারাতে ৬৫ ক্যালোরি বিদ্যমান থাকে। কিন্তু এই ফলটিকে হজম করতে আরো অনেক বেশি ক্যালরি ক্ষয় হয়। 

সেজন্য প্রতিদিন নিয়ম করে এইফল খাওয়া প্রয়োজন যেসব মানুষের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের স্ত্ররের সমস্যা রয়েছে তাদের প্রতিদিন এইফল 

খাওয়া প্রয়োজন। যেসব ব্যক্তিদের ব্লাড প্রেসার হাই তারা নিয়মিত এই ফল খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। এই ফলে থাকা উপাদান কনস্টিপেসনের ও বাউয়েল সিনড্রোম নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে

পাকা পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

পাকা এইফল খাওয়ার উপকারিতা গর্ভাবস্থায় নারীদের পাকা পেয়ারা খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা । তবে সাধারণ মানুষের প্রক্রিয়ার অনেক উপকারী। পাকা ফলে বিদ্যমান আছে ফাইবার ও ভিটামিন সি। সকালে ব্রেকফাস্টের সময় বা হালকা খিদে পেলে এই ফলটি খাওয়া যায়।। 

বিশেষজ্ঞদের মতে কমলা বা আপেলের চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে এইফলে গর্ভাবস্থায় নারীদের ও পিরিয়ড চলা সময়ে অনেক পেট ব্যথা হয় এ সময় হালকা একটু পাকা এই ফল খাওয়া হয় তাহলে দ্রুত সেই ব্যাথাটির নির্মূল হতে থাকবে। আর আমাদের দেশে সারা বছরই পাওয়া যায়। দামে অনেক সাশ্রয়ী থাকার জন্য আরো অনেক ফলের থেকে 

এইফলের পুষ্টিগুণ উপাদান অনেক বেশি আছে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি ও ফাইবার। চারটি আপেলের সমপরিমাণ পুষ্টিগুণ আছে মাত্র ১টি পেয়ারাতে এছাড়াও এই ফলটিতে অনেক বেশি পরিমাণে আছে ভিটামিন এ বি কে ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম প্রোটিন ফাইবার ও খনিজ। 

একটি পেয়ারাতে ২১১মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। আর এই উপাদানটি দাঁত মাড়ি ও মুখগহ্বরের অংশ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।  এই ফলটিতে ভিটামিন বি২ পাওয়া যায় ০.০৯ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ৪ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৫.২ গ্রাম, মিনারেল ০.৬ গ্রাম, রিবোফ্লেভইন ০.০৩ গ্রাম ক্যালসিয়াম ২০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৮ মিলিগ্রাম, ও আইরন ১.৪ মিলিগ্রাম।

লেখকের কথা

অতি সহজেই হাতের কাছে পাওয়া এ ফলটি দামে সাশ্রয় হওয়ায় আমাদের বাড়ির উঠানের গাছ থেকে হোক বা বাজার থেকে কিনে আনা ফল গুলো খুব ভালো করে ধুয়ে এবং পরিষ্কার করে খেতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে এই ফলটি যেন কোন পশু-পাখি না খেয়ে থাকে। পশু-পাখিদের খাওয়া ফল থেকে বিরত থাকবেন কারণ এসব ফল খেলে শরীরের বড় ধরনের রোগের সৃষ্টি হতে পারে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url