কাঁচা ডুমুরের উপকারিতা ও অপকারিতা-ত্বীন ফল কি ডুমুর


আসসালামু আলাইকুম আজকে আমরা জানবো কাঁচা ডুমুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ত্বিন ফল কি ডুমুর। এতে প্রচুর পরিমাণ আছে ফাইবার যা মানব দেহের হজম শক্তির সহায়তা করে। ডুমুর ফল খেলে ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যার সৃষ্টি হয় না। গ্রীষ্মকালে শুকনো ডুমুর না খেয়ে কাঁচা ডুমুর খাওয়া অনেক উপকারি মানব দেহের জন।
কাঁচা ডুমুরের উপকারিতা
আপনারা যারা উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগছেন প্রতিদিন পরিমাণমতো ডুমুর ফল খেলে আপনাদের শরীরের পটাশিয়াম ও সোডিয়াম সামঞ্জস্য পূর্ণ হয় যার জন্য উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়

ভূমিকা

প্রাচীন যুগের গ্রীক সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে ডুমুর বা ত্বিন ফল অনেক পবিত্র একটি ফল সেজন্য এটাকে প্রাকৃতিক এপ্রোডিসিয়াক হিসেবে ধরা হয়।  এই ফলটি মানব দেহের যৌন উত্তেজনা ও প্রেমের প্রতিক হিসেবে কাজ ক। ভারতীয়রা দুধের সাথে ডুমুর একত্রে মিশ্রণ করে খেত এরমধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ম্যাগনেসিয়াম দস্তা ম্যাঙ্গানিজ আইরনের মত উপাদান এ সম্পর্কে জানতে আরো পড়ুন।

কাঁচা ডুমুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

গ্রীষ্মকালে মাছের তরকারি রান্না করলে কাঁচা-কাঁচা ডুমুর দিতেন আগেকার মানুষ কিন্তু এখন আর এই ডুমুর খেতে চাই না মানুষ জন কাঁচা ডুমুরের উপকারিতা একটুও কমেনি তবে শুকনো ডুমুর বেশি ব্যবহার করেন এখনকার মানুষ গ্রীষ্মকালে কাঁচা ডুমুর খাওয়া অত্যন্ত উপকারী ডুমুরে পানির পরিমাণ বেশি ও শর্করার পরিমাণ কম থাকে এজন্য গ্রীষ্মকালে শুকনো ডুমুর না খেয়ে 

কাঁচা ডুমুর বেশি বেশি খাবেন প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা কাঁচা ডুমুর খেলে শরীরের বিভিন্ন রকম রোগবালাই দূর হতে থাকে খাবার হিসেবে ডুমুর সব জায়গাতেই অনেক পরিচিত ডুমুর ভাজি ও ভর্তা ভীষণ সুস্বাদু ও উপাদেহ খাদ্য। ডুমুরে বিদ্যমান আছে উৎসেচক ফায়াসিন এর প্রভাব যার জন্য পরিপাক তন্ত্র ভালোভাবে পরিষ্কার থাকে। এছাড়াও ডুমুরে থাকে আইরন মানবদেহে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে ডুমুর অত্যন্ত উপকারী।

অপকারিতা

ডুমুর ফল মানব দেহের জন্য বেশি উপকারী হলেও এর কিছু অপকারিতা দিক আছে সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলঃ

  • অতিরিক্ত পরিমাণে ডুমুর খাবার ফলে মানুষের শরীরের রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে তাই সাবধানতা অবলম্বন করে এই ফলটি খেতে হবে
  • অনেক বেশি পরিমাণে এই ফলটি খেলে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে
  • আপনাদের শরীরে এলার্জির সমস্যা থাকলে এই ফলের আঠা আপনাদের শরীরে লাগলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে
  • অনেক বেশি পরিমাণে এই ফল খেলে মানব দেহের ওজন বৃদ্ধি হতে থাকবে এবং শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাবে
  • অনেক বেশি ডুমুর খেলে ডায়রিয়া রোগ সৃষ্টি হতে পারে

ত্বীন ফল কি ডুমুর

ত্বীন ফল নারী ও পুরুষের উভয়েরই শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ত্বিন বা ডুমুর ফলে অনেক বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে 

ত্বিন বা ডুমুর ফল মানবদেহের রক্তে ক্ষতিকর সুগারের মাত্রা কমিয়ে ন্যাচারাল সুগার বৃদ্ধি করে বডি ব্যালেন্স ঠিক রাখে এমনকি এই ফল ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি থেকে রক্ষা করে সাম্প্রতিক কালে একটি গবেষণায় দেখা যায় যে তিন ফল নারীর ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে খাদ্য তালিকায় এই ফল রাখার কারণে ৩৪% নারীদের ক্যান্সার হওয়ার 

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য তিন ফল অনেক উপকারী এবং এটি মানুষের শরীরে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও বৃদ্ধি করে ডুমুর ফলে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার আছে সেজন্য মানব দেহের পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ প্রতিরোধ করে।

দেশি ডুমুরের উপকারিতা

এই ফলের গাছটি দেশি ডুমুরের উপকারিতা সমূহ জেনে নিন ডুমুর মিষ্টি জাতীয় ও নরম ফল আপনারা সকলেই চেনেন এই ফলটিকে এ ফলের বাহিরের অংশ অনেক পাতলা এবং ভেতরের অংশে অনেক ছোট বীজ থাকে অনেক ধরনের গুণ বিদ্যমান আছে 

এই ডুমুরে সবজি বা তরকারি হিসেবে খাওয়া যায় আমাদের বাংলাদেশের সব সময় যে ডুমুর টি পাওয়া যায় ফল অনেকটা ছোট ও খাওয়ার অনুপযোগী হয় আমাদের দেশে যে দুটি পাওয়া যায় তার নাম হচ্ছে গোল ডুমুর আরেক ধরনের ডুমুর আছে যার নাম কাক ডুমুর যা শুধু পাখি রাই খায় আমাদের দেশে 

জব ডুমুর তরকারি হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয় বাজারে ডুমুর কিনতে পাওয়া যায় স্বল্প পরিসরে ১০০ গ্রাম দেশি ডুমুরে খাদ্য শক্তি বিদ্যমান ৩৭ কি কিলোক্যালরি ১২৬ মাইক্রগ্রাম ক্যারোটিন সহ ভিটামিন এ বি সি এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান আছে।

শুকনো ডুমুর খাওয়ার নিয়

শীতকালে শুকনো ডুমুর খাওয়ার নিয়ম। এর মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার পটাশিয়াম ভিটামিন কে ও ভিটামিন বি ৬। এছাড়াও শুকনো ডুমুরে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা মানব দেহের ফ্রি রেডিক্যাল এর সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায় 

এর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা এজন্য মিষ্টি জাতীয় খাবার না খেয়ে এই গরমকালে ডুমুর খাওয়া অনেক ভালো বেশ কিছু ছোট ছোট কারণ রয়েছে যার জন্য গরম কালে শুকনো ডুমুর খাওয়া ঠিক না ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা গরমকালে শুকনো ডুমুর বেশি বেশি খেলে অনেক গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে কাঁচা ডুমুর রান্না করে খেলে খুব বেশি ক্ষতি হয় না 

মানবদেহে তবে গরমকালে শুকনো ডুমুর বেশি খেলে এতে থাকা ফাইবার মানবদেহে হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে সেজন্য পেটের সমস্যায় না পড়ার জন্য গরমকালে শুকনো ডুমুর খাওয়া থেকে বিরত থাকো শুকনো ডুমুর খাবার ফলে মানবদেহের রক্তচাপ ও বার্ধক্য নিয়ন্ত্রণে থাকে এছাড়াও ডুমুর মানুষের ত্বক চুল ও নখের সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি রাখতে সহায়তা করে ডুমুরের পেস্ট তৈরি করে 

মুখের ত্বকের উপরে লাগালে ত্বক ব্রুণ প্রতিরোধই হয়ে ওঠে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ডুমুর খেলে মানব দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে রক্তের ট্রাই গ্লিসারাইড এর পরিমাণ হ্রাস করতে পারে শুকনো ডুমুর খেলে ডুমুরে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট রেডিকেল হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধ করে উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ শুকনো ডুমুর কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ প্রতিরোধ করে।

ডুমুর ফল এর উপকারিতা

প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় ডুমুর কে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই ফলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি ভান্ডারের সমাহার ডুমুর ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। ডুমুর সম্পর্কে যদি আলোচনা করা হয় এর মধ্যে বিদ্যমান আছে জিংক ম্যাঙ্গানিজ ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের মত পাওয়ারফুল খনিজ পদার্থ শুকনো ডুমুরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে 

এছাড়াও ডুমুর ফলে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাসিয়াম যা মানব দেহের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে ডায়াবেটিসের রোগী ডুমুরকে ভিজিয়ে রেখে খায় তাহলে রক্তে গ্লোকজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগীদের এবং পাইলসের রোগীদের বেশি বেশি ডুমুর ফল খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন বেশি বেশি ডুমুর খেলে মলত্যাগ স্বাভাবিক করে অন্ত্রকে সুস্থ রাখে।

ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশের সর্বোত্রই ডুমুর ফল আছে একে অনেক নামে ডাকা হয় যেমন যৌগই ডুমুর আনজির ও জজম। ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে কিছু তথ্য বছরের সব সময় এই ফল খাওয়া যায় কাঁচা ডুমুর তরকারি বা ভর্তা করে খাওয়া যায় এবং শুকনো ডুমুর বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় শুকনো ডুমুর খাওয়ার জন্য 

প্রথমে একে সূর্যের তাপে শুকিয়ে নিতে হবে যাতে আপনি সারা বছর সংরক্ষণ করে এই ডুমুর খেতে পারেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডুমুর ভিজিয়ে রেখে তার সাথে দুগ্ধযুক্ত করে শরবত তৈরি করতে হয় এছাড়া কাঁচা ডুমুর আপনি সালাদ হিসেবে খেতে পারেন ডুমুর খাওয়ার সব থেকে ভালো উপায় হচ্ছে মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যের সাথে সংমিশ্রণ করে খাওয়া।

শেষ কথা

কাঁচা বা শুকনো ডুমুর যে উপায়েই খাওয়া হোক না কেন এর ফলাফল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাবে মানবদেহে মিলবে শুধু মাত্র খাদ্য হিসেবেই একে ব্যবহার করা হয় না এর বিভিন্ন রকম ঔষধি গুনাগুন রয়েছে যা মানব দেহের রোগ প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url