ইসলামে মধু খাওয়ার নিয়ম-সকালে মধু খাওয়ার অপকারিতা
প্রিয় পাঠক এতে আছে প্রচুর পরিমাণ রোগ প্রতিরোধকারী শক্তির উৎস। ইসলামে মধু খাওয়ার নিয়ম ও সকালে মধু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। শরীরে উচ্চ কোলেস্টোরেলের এর মাত্রা কমানো হজম শক্তি বাড়ানো অতিরিক্ত ওজন কমানো বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা আছে এতে ।
মহান আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সর্বোত্তম একমোহ ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক এই মধু যা মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এটা খাওয়ার সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক থেকে দুই চামচ মধু হাতে নিয়ে চেটে চেটে খাওয়া।
ভূমিকা
এতে আছে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ যা মানুষের দেহে খুব দ্রুত এনার্জি তৈরি করে। এতে আছে ভিটামিন এমাইনো এসিড ও খনিজ। পিওর খাঁটি মধুতে ৪৫টি খাদ্য উপাদান আছে ১০০ গ্রাম মধুতে আছে ২৮৮ ক্যালোরি এ সম্পর্কে জানতে আরও পড়ুন।
ইসলামে মধু খাওয়ার নিয়ম
মহান আল্লাহর সকল হালাল খাদ্যের মধ্যে অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাধু খাবার হচ্ছে এটি । আরবি শব্দ নাহল যার অর্থ মৌমাছি বা মধুপোকা নাহল নামে পবিত্র কুরআনে একটি সূরা আছে মহান আল্লাহ তায়ালা এই সূরার মধ্যে বলেন "ইয়াখরুজু মিমবুতুনিহা শারাবুম মু্খথা লিফুন আল্ওয়া নহু ফীহি শিফাউল লিন্নাসি"
যার অর্থ তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানিও নির্গত হয় তাতে মানুষের জন্য রয়েছে সকল রোগের প্রতিকার মধু খাদ্য এবং ওষুধ দুটোই যেসব অঞ্চলে ফুলের প্রাচুর্যতা বেশি সেসব অঞ্চলের এটি অনেক সুস্বাদু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একদা এক সাহাবী তার ভাইয়ের অসুস্থতার খবর নিয়ে আসলেন তারপর প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ
তাকে মধু খাওয়ানোর জন্য বলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর মতে এটি সকল পানীয়র থেকে সর্বোত্তম যে এটা হাতে নিয়ে চেটে চেটে খায় তার কোন বড় বিপদ হয় না। যে মানুষ মাসের মধ্যে তিন দিন এটা হাতে নিয়ে চেটে চেটে খাবে ওই মাসটিতে তার আর বড় কোন রোগ হবে না। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন
আরও পড়ুনঃ সকালে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা জানুন
যে ব্যক্তি রোগ মুক্তির কামনা করে তাকে সকালের নাস্তা হিসেবে এটি মিশ্রিত পানি পান করতে হবে হাদিসে বর্ণিত রয়েছে সেফা দানকারী দুটি বস্তুকে তোমরা নিজেদের করে নাও একটি হচ্ছে কুরআন অপরটি মধু রোগ ব্যাধি সেফা দানকারী হিসেবে এটা এক মহাঔষধ। এতে ৯৯ প্রকারের রোগের ঔষধের প্রতিষেধক আছে।
গরম জলের সাথে মধু খাওয়ার নিয়ম
এতে অনেকে অনেক ভাবে খায় এটি খেতে প্রায় সব মানুষই ভালোবাসে। গরম জলের সাথে মধু খাওয়ার নিয়ম। কেউ চায়ের সঙ্গে আবার কেউ গরম জলের সাথে মিশিয়ে এটা খেতে ভালোবাসে এটি মানব দেহের ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে প্রতিদিন নিয়মিত এটি খেলে পাকস্থলীতে গ্লুকোজ তৈরি হয় গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে
সুগারের মাত্রা বাড়তে থাকে যার জন্য মেদ কমানোর হরমোন অতিরিক্ত মাত্রায় চাপ বাড়াতে থাকে যার দরুণ মেদ কমতে থাকে। এতে থাকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা মানব দেহে রোগ প্রতিরোধকারী শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে এটা প্রতিদিন রাতে খেলে ঘুম ভালো হয় রাতে ঘুম না হওয়ার সমস্যা দূর হয়ে যায় এটার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান বিদ্যমান আছে
যা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এক চামচ করে মধু খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি বাড়তে থাকে এটা এবং মানুষের ত্বকের জন্য এটি অনেক উপকারী এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি করে
সকালে মধু খাওয়ার অপকারিতা
এটি যেমন মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারী খাদ্য উপাদান কিছু কিছু লোকের জন্য এই পানীয় ক্ষতিকর হতে পারে। কিছু কিছু মানুষ সকালে গরম পানির সঙ্গে মধু ও লেবু মিশিয়ে খায় খালি পেটে ওজন কমানোর জন্য এই পানিওর অপকারিতা ও হতে পারে এটি দ্বারা বিভিন্ন সমস্যা সম্মুখীন হয় পেটে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হয় অতিরিক্ত পরিমাণে এটি খেলে রক্তে উচ্চ শর্করা
বৃদ্ধি পেতে থাকে ডায়াবেটিস রোগীদের খুব বেশি এটান খাওয়া উচিত না অতিরিক্ত পরিমাণে এটা খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে মানুষের শরীরে এলার্জি বেড়ে যেতে পারে যার ফলে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা মুখ ফুলে যাওয়া ফুসকুড়ি বমি বমি ভাব কাশি মাথা ব্যাথা শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তি বোধ হতে পারে শিশুদের বেশি পরিমাণে এটি পান করানো ঠিক না যার জন্য
শিশুর দেহে ফোরুকটোজ থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে ফোরুকটোজ সৃষ্টি হলে ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে এটি খেলে ফুড পয়েজিং হতে পারে।
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
কালোজিরা ঔষধি গুণ আয়ুর্বেদিক ইউনানী কবিরাজি চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয় মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হলেও ইউনানী চিকিৎসা মতে মহিলাদের বিভিন্ন রোগের সমস্যার মহা ঔষধ কালোজিরা মহিলাদের প্রসবকালীন ব্যাথা কমাতে ও গর্ভবতী মহিলাদের স্তনে দুগ্ধগ বৃদ্ধির জন্য কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা মধু ও কালোজিরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে কালোজিরা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয় যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে কালোজিরা ও মধু নারী ও পুরুষের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে অধিক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে
নিয়মিত খাবারের সাথে কালোজিরা খেলে পুরুষের শুক্রাণু ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকে মধু ও কালোজিরা বিভিন্ন রীগ থেকে মুক্তির সম্ভাবনা সৃষ্টি করে নিয়মিত মধু ও কালোজিরা খেলে দেহের রক্ত সঞ্চালন ঠিকমত কাজ করে এর ফলে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি হয়
এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে প্রতিদিন মধু ও কালোজিরা শিশুকে খাওয়ালে শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটতে থাকে কালোজিরা শিশুর মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ও সুস্থতা রাখতে অনেক কার্যকরী
মধু কালোজিরা ও রসুন খাওয়ার উপকারিতা
নারী ও পুরুষের দৈহিক ও মানষিক শক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা মধু ও রসুন বেশ কার্যকরী । প্রতিদিন এ সব খাবার খেলে পুরুষের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং রোগ মুক্তির সম্ভাবনাময় উপায় মধু কালোজিরা ও রসুন খাওয়ার উপকারিতা প্রতিদিন এক চামচ মধুর সঙ্গে ২১ টি কালোজিরা খেতে হবে সকালে কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার ভালো পারলে একমাস প্রতিদিন খাবেন রসুন খালি পেটে খেলে অনেক ভালো উপকার পাওয়া যায়
যাদের খালি পেটে রসুন খেতে সমস্যা তারা ভরা পেটে রসুন খাবেন প্রতিদিন নিয়মিতভাবে গরমের সময় এক কোয়া ও শীতের সময় ২ কোয়া রসুন খেতে হবে হার্টের জন্য অনেক উপকারী এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
ছেলেদের মধু খাওয়ার উপকারিতা
১০০ গ্রাম মধুতে ৩০৪ কিলো ক্যালরি পাওয়া যায় এতে আছে কিছু পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম ছেলেদের মধু খাওয়ার উপকারিতা বিষয়ে জেনে নিন মানব দেহে এটির উপকারিতা অনেক পেতে থাকা ক্যালসিয়াম পুরুষের দেহকে দ্রুত বর্ধনশীল করে তুলে এটি পুরুষের স্নায়বিক দুর্বলতা কমাতে সক্ষম।
এটি দৈহিক শক্তি বেশিদিন ধরে রাখতে সহায়তা করে ৬০ বছর বয়সী মানুষও সুস্থভাবে হাঁটাচলা করতে পারবে। এটা মানুষের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে এতে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রতিদিন খাঁটি মধু পান করলে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে
শারীরিক দুর্বলতা দূর করে দেয় ও তৎক্ষণাৎ শক্তি যোগায় এটি আমাদের শরীরে হজম শক্তির বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকরী রাতে দুধের সঙ্গে এটি মিশিয়ে শারীরিক ও মানষিক দূর্বলতা এবং অনিদ্রা দূর হয় নিয়মিত ভাবে এটি খেলে পুরুষের ইমিউনিটি সিস্টেম আরো শক্তিশালী হতে থাকে।
সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
এটা সারা বছর খাওয়া অনেক উপকারী এতে কিছু উপাদান আছে যা শরীর ভালো রাখতে সহায়তা করে এতে আছে ভিটামিন এ বি সি এবং এনজাইম খনিজ পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের মত উপাদান সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা মধুতে তেমন কোলেস্টেরল নেই এজন্য এটা খেলে কোন সমস্যা হবে না ।
মধু ও কালোজিরা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতে ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে আলসার রোগ ভালো করতে সক্ষম কালোজিরাতে অত্যাধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ আছে কালোজিরা প্রতিদিন খাবারের ফলে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে কালোজিরা ফুলের মধু বিশ্বের সবচাইতে উৎকৃষ্ট মানের মধু হিসেবে পরিচিত কালোজিরের তেলও অনেক উপকারি । নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের
প্রত্যেকটি অঙ্গকে সতেজ ও সুন্দর রাখে কালোজিরা ও মধু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী কালোজিরা নিম্ন রক্তচাপ বৃদ্ধি করে স্বাভাবিক করতে সক্ষম মধু ও কালোজিরা বেশিদিন শক্তি ধরে রাখতে অধিক কার্যকরী।
লেখকের শেষকথা
একটু গরম দুধের সঙ্গে এটা মিশিয়ে খেলে কোন ধরনের ক্ষতি হবে না। মধু ও গরম দুধ ঠান্ডা জনিত গলার রোগ প্রতিরোধ করে প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই মিশ্রণটি অনেক শক্তি বর্ধক। এছাড়াও গ্রিন টি ও এটা খেলে অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায় এই পানিও হতে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা তারুণ্যতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url