গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা-ড্রাগন ফল দিয়ে রূপচর্চা


প্রিয় পাঠক ড্রাগন ফল খেতে অনেক সুমিষ্ট ও অনেক সুস্বাদু গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও ড্রাগন ফল দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করবেন আজকে আমি তা আপনাদের জানাবো। উনিশ শতকের শুরুর দিকে ফরাসিরা প্রথম ড্রাগন ফলকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নিয়ে আসেন ড্রাগন ফলের ভেতরের অংশ সাদা হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফলে বিদ্যমান আছে বিস্ময়কর পুষ্টিগুণ উপাদান। এটি দেখতে বিস্ময়কর এক ফল যা শুধু খাওয়াই যায়না এর খোসা দিয়ে রূপচর্চা ও করা যায়। বর্তমানে এই ফলের চাষ আমাদের দেশে প্রায় সব জায়গাতেই হচ্ছে তাই সবজির বাজারগুলোতে গেলে অনায়াসে এই ফলের দেখা মি।

ভূমিকা 

এই ফল অনেক সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর যা মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী দৈনন্দিন জীবনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস এবং খাবার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে তবে এই ড্রাগন ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা আছে এটি মানুষের ত্বকের যত্নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এর খোসাও অনেক মূল্যবান এ সম্পর্কে জানতে আরও পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

অনেক পুষ্টিগুনে ভরপুর ড্রাগন ফল দিনে দিনে বাড়ছে এই ফলের চাহিদা ড্রাগন ফল মূলত দুই ধরনের হয়ে লাল এবং সাদা রংয়ের এর ভেতরের অংশে বেশ কিছু রঙের হয়ে থাকে লাল সাদা হলুদ ও গোলাপি রঙের এই ফলটি খেতে অনেক সুস্বাদু রসালো এবং মিষ্টি। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ড্রাগন ফল খাওয়া অনেক উপকারী এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ 

নিশাত শারমিন নিশি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভাগীয় প্রধান বলেন ড্রাগন ফল নিরাপদ। গর্ভবতী মহিলাদের আনারস ও পেপে খাবার জন্য মানা করা হয়। তবে ড্রাগন ফলে অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ তেমন কিছু পাওয়া যায়নি গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে ওমেগা ৩ ও আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য 

বিভিন্ন ধরনের স্বস্থ্য টিপস দেয় আর তার সাথে অন্যান্য ফলের সঙ্গে ড্রাগন ফল খাওয়ার কথা বলেন তিনি। এতে রয়েছে ভিটামিন বি আয়রন ও ফোলেট এজন্য গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি একটি উপকারী ফল ভিটামিন বি ও ফোলেট পেটের মধ্যে থাকা ছোট্ট শিশুর জন্মগত ত্রুটিগুলো রোধ

করে গর্ভবতী মহিলাদের শক্তি উৎপাদনের সাহায্য করে এই ফলটিতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের বৃদ্ধির জন্য অনেক উপকারী এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম মহিলাদের পোস্টমেনপোজাল জটিলতার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।

ড্রাগন ফল দিয়ে রূপচর্চা

ড্রাগন ফল ত্বকের ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে ত্বকে আদ্রতা নিয়ে আসে ত্বক নরম ও নমনীয় হয়। এই ফলে বিদ্যমান থাকা ভিটামিন সি এবং মেলানিন সংশ্লেষণ কমিয়ে কোলাজেন এর উৎপাদন বৃদ্ধি করে যার জন্য ত্বকের লাল দাগ দ্রুত কমতে থাকে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
  • এ ফলের কয়েক টুকরা নিয়ে মসৃণ ভাবে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে ছোট্ট একটি তুলার বল তৈরি করে নিয়ে ত্বকের ব্রণের উপর হালকা করে ঘুষতে হবে কিছু সময় বা এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন কিছুদিনের মধ্যে ব্রণ দূর হয়ে যা।
  • ত্বক হাইড্রেট করাতে ড্রাগন ফলের রস আদা চা চামচ এর সাথে এক টেবিল চামচ টক দই মিক্স করে প্রায় ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে কিছুক্ষণ পর হালকা কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • ১ থেকে ৪ কাপ পরিমাণ এই ফল কেটে চটকে নিতে হবে তারপর ভিটামিন ই ক্যাপসুল তেল ও অ্যালোভেরা জেল এর সঙ্গে মিক্স করে নিতে হবে এই পেস্ট টি ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে এর কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে তাহলে ত্বক উজ্জ্বল নমনীয় ও কমল হয়ে উঠবে।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা 

ড্রাগনের ফলের প্রথম উৎপত্তি হয়েছিল আমেরিকাতে ক্যাকটাস জাতীয় একটি ফল এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম হাইলোসেরিয়াস আনডেটাস। ভিয়েতনাম থেকে এর চারা বাংলাদেশে এনে চাষ শুরু হয় ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ ড্রাগন ফল মূলত

তিন ধরনের হয়ে থাকে লাল রংয়ের ড্রাগনের ভেতরের অংশ সাদা হয় আরেক জাত হল বাইরের অংশ এবং ভেতরের অংশ দুটোই লাল এছাড়াও আরেকটি ড্রাগন আছে যার বাইরের অংশ হলুদ এবং ভিতরের অংশ সাদা রঙের এর নাম কোস্টারিকার ড্রাগন ড্রাগনে আছে বিভিন্ন রকম পুষ্টিকর উপাদান যেমন

ভিটামিন খনিজ মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই ফলে প্রচুর পরিমাণ ডায়েটরি ফাইবার থাকে এবং ক্যালরি অনেক কম থাকে গোটা একটি ড্রাগনে থাকে ১৩৬ গ্রাম ক্যালোরি ৩ গ্রাম প্রোটিন ৭ গ্রাম ফাইবার ম্যাগনেসিয়াম ৮% আয়রন ৭% ও ভিটামিন ৪%
  • ড্রাগন ফলে বিদ্যমান আছে ফাইবার যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরী একজন মানুষ প্রতিদিন ড্রাগন ফল খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় ডায়াবেটিসজনিত সমস্যায় যারা আছেন তারা নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে
  • এই ফলে আছে মনোসেচুয়েটেড নামের উপাদান এই উপাদানটি মানবদের হার্ট সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এই ফলে আছে এক অনন্য শক্তি যা মানব দেহের খারাপ কোলেস্টেরল গুলো ধ্বংস করে দেয় এবং ভালো কোলেস্টোরেল তৈরি করে মানুষের হাটকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে
  • ড্রাগনে বিদ্যমান ভিটামিন সি ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী ভিটামিন সি এর অভাবে মানুষের মুখের ত্বকে ব্রণের সৃষ্টি হয় এজন্য প্রতিদিন এ ফল খেলে ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে যায় এবং ড্রাগন ফলের পেস্ট তৈরি করে লাগালেও ব্রণ দূর হয়ে যায়
  • ড্রাগন ফলে বিটা ক্যারোটিন থাকে যা মানুষের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা রোগ হয় এই ফলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় ম্যাকুলার ডি জেনারেশন বা ছানি পড়া রোগীরা প্রতিদিন ড্রাগন ফল খেলে তাদের চোখের দৃষ্টি আর উন্নত হয়।

অপকারিতা

  • অতিরিক্ত পরিমাণে এই ফল খেলে মানবদেহে হজমে শক্তি বেড়ে যেতে পারে এতে থাকা ফাইবারের কারণে। যার দরুন ডায়রিয়া রোগ হতে পারে
  • এলার্জির জনিত সমস্যা যাদের আছে তাদের ড্রাগন ফল না খাওয়াই ভালো এটি খেলে শরীরের এলার্জি বেড়ে যেতে পারে চুলকানি ও শরীর ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে
  • প্রতিদিন যারা ওষুধ খান তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত। না হলে ওষুধের সাথে  বিশক্রিয়া হয়ে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে

ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা

বিস্ময়কর একটি ফল ড্রাগন এ ফল পাচন তন্ত্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম ও শরীরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ড্রাগন ফল স্বাস্থ্যকর ত্বক ও চোখের জন্য বেশ উপকারী ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা হল।
  • ড্রাগন ফলের খোসা কিভাবে প্রস্তুত করতে হবে তা জেনে নেওয়া যাক এজন্য প্রথমে একটি বা দুটি ড্রাগনের খোসা নিতে হবে তারপর ভালো করে ধুয়ে কুচি কুচি করে কাটতে হবে এরপর তাতে আড়াইশো গ্রাম ফুটন্ত পানিতে এই খোসা গুলো দিতে হবে এরপর ৭ মিনিট ফোটাতে হবে তারপর নামিয়ে গ্লাসে ঢেলে লবণ  মিক্স করে খেতে হবে যার উপকারিতা অনেক বেশি
  • এই ফলের খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি বিটা ক্যারোটিন ও প্রোটিনের উৎস যা মানব দেহে পুষ্টিকর উপাদান সাহায্য করে এবং শরীরের অপুষ্টিতা দূর করে
  • এই ফলের খোসা কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এতে আছে উচ্চমাত্রায় চর্বি
  • ড্রাগন ফলের খোসাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা বিষক্রিয়া প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে

লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা

বাংলাদেশের প্রধান যে ড্রাগন ফল পাওয়া যায় তার মধ্যে লাল ড্রাগন ফল বিখ্যাত লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ
  • মানবদেহে ভিটামিন প্রোটিন ও খনিজের উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে
  • মানব দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ও হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে
  • লাল ড্রাগন ফল খেলে মানুষের শরীরে দুর্বল কোষগুলি বৃদ্ধি পায় যা অস্তিপান কে আরো উন্নত করে তোলে
  • শক্তিশালী অন্তিক্রিয়া প্রদান করার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়
  • মানুষের ত্বকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে লাল ড্রাগন ফল
  • ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে সমর্থন করিয়ে পাসনা পদার্থকে সহজেই সংগ্রহ করে ফেলে

অপকারিতা

  • কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ড্রাগন ফল খেলে গ্যাস সহ বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে যা আবহাওয়ার কারণে হয়ে থাকে
  • যেসব মানুষের এলার্জিজনিত সমস্যা আছে তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত। না হলে খারাপ হবে  চোখের জ্বালাপোড়া ও ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে

ড্রাগন টির উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফলে বিদ্যমান আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ড্রাগন টির উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম এই ফলে আছে ভিটামিন বি ও থায়ামিন যা ড্রাগন ফলের ছোট ছোট শীটগুলোতে থাকে এরমধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকে ক্যালসিয়াম প্রোটিন ও ভিটামিন বি এবং আয়রন থাকে অনেক পরিমাণ। তাই ড্রাগনের টি বা চা তৈরি করে খেলে তার শরীরের জন্য অনেক কার্যকরী হবে 

এতে থাকা ফাইভারের কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য পাইলস কোলনের সমস্যা গুলো দূর হয়ে যায় ড্রাগন টি তৈরি করার পদ্ধতি প্রথমে ভালো একটি ড্রাগনের খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে এরপর তা ছোট ছোট অংশে কেটে নিতে হবে তারপর একটি পাত্রে পানি দিয়ে ফোটাতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর 

এই ছোট ছোট খোসাগুলো পাত্রের মধ্যে দিতে হবে তারপর আবার কিছুক্ষণ পানি ফোটাতে হবে এরপর পানির রং যখন লাল হবে তখন পাত্রটি নামিয়ে গ্লাসে ছেঁকে নিতে হবে এবং খালি বা চিনি মিক্স করে আস্তে আস্তে খেতে হবে এই চায়ের উপকারিতা মানব সে শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

লেখকের মন্তব্য

ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য উপকারিতা উপাদান। আর এই ফল খেতে হবে সালাদের সঙ্গে প্রতিদিন ড্রাগন ফল খাবারের তালিকায় রাখলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ গুলো দূর হয়ে যাবে এবং মানব দেহ সুস্বাস্থ্য ও সুন্দরভাবে থাকবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url