ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার ১০টি কারন-ও মুক্তির ঔষধ


সম্মানিত পাঠক ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার ১০টি কারন ও মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত ডায়াবেটিস হৃদরোগ ও কিডনি রোগের ফলে বহুমূত্র রোগের সৃষ্টি হচ্ছে
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার ১০টি কারন
এই রোগটি হলে আমাদের শরীর একেবারে দুর্বল হয়ে পড়ে রাতে ঘুমালে ঘুম থেকে উঠে বারবার টয়লেটে যেতে হয় আর এর ফলে ঘুমের অনেক ক্ষতি হয় যার ইফেক্ট আমাদের শরীরে পড়ে।

ভূমিকা 

বহুমূত্র বা নকটারিয়া বর্তমান সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ হিসেবে আমাদের দেশেও সারা পৃথিবীতে সারা ফেলেছে বিশেষ করে বৃদ্ধ বয়সী লোকদের এ রোগটি বেশি হচ্ছে এর পাশাপাশি কম বয়সী ছেলে মেয়েদের ও এ রোগের সৃষ্টি হচ্ছে এ সম্পর্কে জানতে নিচে আরও পড়ুন।

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার ১০টি কারন

বহুমূত্র বা ঘন ঘন মূত্র রোগের নাম নকটারিয়া । রাতে ভাত খেয়ে ঘুমানোর পর ঘুম থেকে একটু পরপর টয়লেটে গেলে বহুমূত্র বা নকটরিয়া রোগ হয়েছে। বর্তমান সময়ে এই রোগটি বেশিরভাগ মানুষেরই হচ্ছে । যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠান গবেষণা করে মতামত দিয়েছেন যে রাতে ঘুমানোর পরে দুইবার 

প্রস্রাব করার জন্য যদি কোন ব্যক্তি ওঠে তাহলে তার নকটারিয়া রোগ আছে। আমাদের দেশে বয়স্ক মানুষের বিশেষ করে ৭০ বছরের বেশি বয়সের ব্যক্তিদের প্রতি ৫ জনে ৩ জনের এ রোগ হচ্ছে। অনেক কম বয়সীরা ও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন । দুটি কারণের ফলে এই রোগ হয় প্রথমটি হচ্ছে মূত্রথলি নির্ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার 

ফলে এবং দ্বিতীয়টি মাত্র উৎপাদন বেড়ে যাওয়া ফলে। এই সমস্যাগুলোকে প্রধানত পলি ইউরিয়া বলা হয়। এর প্রধান ১০টি কারণ হলো
  • প্রথম কারণটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য অঙ্গের ধারণ ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে যার পরিমাণ ৩০০ থেকে ৬০০ মিলিলিটার হয়ে থাকে এ ধারণক্ষমতা কমে গেলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়
  • মহিলাদের ক্ষেত্রে স্থূলতা ও পেলভিক অর্গান প্রলেপসের মত সমস্যা সৃষ্টি করে পেলভিক অর্গান প্রলেপসের জন্য জরায়ু মূত্রথলী ও মলদ্বার দুর্বল হয়ে যায় বা ঢিলা হয়।
  • পলি ইউরিয়ার মত নক্টারিয়া বাড়াতে বহুমূত্র উৎপাদনের হার অ্যান্টিডিউরেটিক হরমোনের প্রভাবে কমতে থাকে কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দে এই হরমোন নিঃসরণ রাতের বেলা কমে যায় ।
  • বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন ডায়াবেটিস এড এ মাটোস স্টেটস ওর টিস্যুতে অত্যাধিক তরল আটকে থাকার ফলে ফোলাভাব সৃষ্টি হয়ে হৃদরোগ উচ্চ রক্তচাপ সন্ধ্যায় বেশি তরল গ্রহণ করলে অত্যাধিক মাত্রায় অ্যালকোহল তামাক ও ক্যাফেইন যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে।
  • বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে এই রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
  • উচ্চ রক্তচাপ ইচ্ছার জন্য ব্যবহৃত ওষুধ খাওয়ার ফলে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • বাইপলার ডিসঅর্ডার এর মত মানসিক সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ লিথিয়াম সেবনের ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়ে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ডিপ্রেশন ও মানসিক চাপ প্রতিরোধের ঔষধ খাবার ফলে এই সমস্যা তৈরি হতে পারে কারণ এগুলো অনেক সময় এন্টিডিউরেটিক হরমোনের কাজ কম করে দেয়।
  • ডিরেক্টইস তরল ধারণক্ষমতার চিকিৎসায় উচ্চ রক্তচাপের জন্য ব্যবহৃত ওষুধ সেবন করলে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

ও মুক্তির ঔষধ

বহুমূত্র বা ঘনঘন প্রস্রাব এমন একটি রোগ এ রোগটি হলে রাতের ঘুম একবারে হারাম হয়ে যায়। এই সমস্যাটি হলে রাতে ঘুমের সময় শুধু টয়লেটে দৌড়াতে হয় এজন্য বেশ কিছু ওষুধের নাম দেওয়া হল এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য।
  • লাইকোপোডিয়াম ( Lycopodium ) ঘনঘন প্রস্রাব রোধে অন্যতম কার্যকরী একটি ওষুধ
  • আয়োডিয়াম ২০০ (Iodium-200) ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের এই ওষুধ খাওয়ার ফলে খুব ভালো ফলাফল মিলে
  • নেট্রাম সালফ (Natrum Sulfh 3x) শরীর খুব দুর্বল ও পানির পিপাসা কম থাকলে ওষুধ অনেক কাজে দিবে
  • হ্যালোনিসিয়াস ২০০ (Helonias-200) বৃদ্ধদের ঘন ঘন প্রস্রাবের বেশ কার্যকরী ফলাফল দেয়।
  • কস্টিকাম ২০০(Causticum-200) প্রস্রাবের পেক ধারণ ক্ষমতার অক্ষমতা ও হাঁটা চলার সময় প্রস্রাব করে দেওয়া থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এই ওষুধ অনেক কার্যকরী
  • এসিড ফস ( Acid Phos) দিন অপেক্ষা রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার জন্য এই ঔষধ অনেক কার্যকরী।
  • এপিস মেল (Apis Mel) প্রস্রাব করার সময় মূত্রথলিতে অনেক জ্বালা যন্ত্রণা ও ব্যাথা অনুভব হলে এই ওষুধ খেতে হবে
  • নাক্স ভোম (Nux Vom) প্রস্রাবের বেগ অনেক কিন্তু প্রস্রাব অনেক কম পরিমাণে হয় এবং অনেক ব্যথা ও জ্বালা যন্ত্রণা হলে এই ওষুধ খেতে হবে
  • ক্যান্থারিস(Cantharis) প্রস্রাবের প্রেগণিক এই সময় কাটার মত ব্যথা অনুভব হয় প্রস্রাব করার পরে মুদ্রা সহ খালি হয় না এই সমস্যা হলে এই ওষুধ খেতে হবে।
  • সারসাপারিলা( Sarsaprilla) বিভিন্ন রোগের উপসর্গ থেকে ওষুধ জীবনের ফলে মনোমোনো প্রস্তাব সৃষ্টি হলে এই ওষুধটি খেতে হবে।

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত জেনে নিন

প্রস্রাবের অনিয়ন্ত্রিত ভাব ও ওভার একটিভ ব্লাডার প্রস্রাব করার প্রবণতাকে বাড়িয়ে তোলে। ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত জেনে নিন
  • জিরা একটি সুগন্ধ তো ভেষজ ওষুধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে জেলার মধ্যে রয়েছে এক ধরনের তেল এজন্য মূত্রনালির বিভিন্ন ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে জিরা গরম পানিতে ফুটিয়ে তা পান করলে ঘনঘন প্রস্রাব করার প্রবণতা কমে যাবে।
  • শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ওজন থাকলে এই সমস্যা হয় এজন্য আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন থাকলে নিয়মিত ব্যায়াম ও ডায়েটের মাধ্যমে এক্সট্রা ওজন কমিয়ে ফেলতে হবে।
  • দতুলসীর মধ্যে রয়েছে অনেক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করার গুণাগুণ এজন্য আযুর শাস্ত্রে বলা হয়েছে তিন থেকে চারটি তুলসী পাতা গুঁড়ো করে এর সঙ্গে অল্প কিছু পরিমাণে মধু মিশিয়ে খেলে এ রোগ খুব দ্রুত সেরে যায়।
  • এই সমস্যাটি দূর করতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম কেবল ব্যায়াম পেলভিক ব্যায়াম করলে খুব দ্রুত এই সমস্যাটি দূর হয়ে যাবে।
  • অতিরিক্ত টয়লেটে যাওয়ার অভ্যাসকে প্রতিহত করতে হবে নিজের মানসিক শক্তির উপরে কারণ এই সমস্যাটি একবার তৈরি হয়ে গেলে আপনা আপনি একটু পর পর টয়লেটে যেতে ইচ্ছে করে।
  • এই সমস্যাটি তৈরি হলে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়মমাফিক ওষুধ খেতে হবে।

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত

প্রস্রাব বা ইউরিন আমাদের শরীরে শুধু বিষাক্ত পদার্থই বের করে না এর ফলে অনেক কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত জানুন
  • এর জন্য নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিউ মাফিক ঔষধ সেবন করতে হবে।
  • ঘুমানোর ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা আগে সব ধরনের তরল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে অ্যালকোহল ও ক্যাফিন যুক্ত খাবার।
  • শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের ফলে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে যেমন হৃদরোগ ডায়াবেটিস ও কিডনিজনিত সমস্যা হলে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে প্রয়োজন মাকে ওষুধ কিনে খেতে হবে।
  • এই সমস্যার জন্য প্রধান ঔষধ হচ্ছে অক্সিজ পাস ৫ এমজি। oxyspas 5mg tablet।

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব কেন হয় জেনে নিন

ঘন প্রস্রাব বা বহুমূত্র রোগ বর্তমান সময়ে একটি গুরুতর সমস্যার দিকে অগ্রসর হচ্ছে এজন্য এ রোগ হলে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সঠিক নিয়মে ওষুধ সেবন করতে হবে ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব কেন হয় জেনে নিন।
  • শরীরের মধ্যে থাইরয়েড ও করটিসল হরমোন বৃদ্ধি পেলে এই সমস্যা হয়।
  • মস্তিষ্কের টিউমার কিডনি রোগ অস্ত্রপাচার আঘাতজনিত রোগের কারণে আমাদের শরীরের এডি এইচ হরমোন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না তাই এ সমস্যা হয়।
  • দেহের রক্তের ভেতরে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম এর মধ্যে তারতম্য ঘটলে অতিরিক্ত ঘনঘন প্রস্রাব রোগ সৃষ্টি হয় শরীরের মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যান্য সমস্যা থাকলে এ রোগটি হয়।
  • বয়স্ক পুরুষদের প্রোটেস্টের সমস্যা থাকলে।
  • মূত্রনালী ও মূত্রথলির কোন ধরনের সংক্রামন থাকলে
  • শরীরের স্নায়ু রোগ ও মূত্রনালীর ক্যান্সার থাকলে এই রোগ সৃষ্টি হয়।

মেয়েদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

এখনকার সময়ে মহিলাদের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা একটু বৃদ্ধি পেয়েছেন । বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার চান্স ফিফটি পার্সেন্ট বেড়ে গেছে মেয়েদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার জানুন
  • গর্ভাবস্থার শুরু ও শেষের দিকে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়
  • শরীরের মধ্যে ডায়াবেটিস ও কিডনি জাতীয় কোন রোগের সমস্যা থাকলে এ রোগ সৃষ্টি হয়।
  • বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ও কোমল পানীয় পরমাণু প্রস্রাবের প্রবণতা বৃদ্ধি করে
এই সমস্যা থেকে প্রতিকার পাওয়ার উপায় হচ্ছে
বিভিন্ন ধরনের ব্যয় ব্যায়াম করার ফলে যেমন বায়ো ফিডব্যাক কেগেল পেলভিক কুইক ফ্লাকস ব্যায়াম বেশি বেশি করতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের উপকারী উপাদান যেমন ফল ও শাকসবজি তরমুজ স্ট্রবেরি কলা আপেল না ব্ল্যাকবেরি নারকেল গাজর মরিচ লেটুস ব্রোকলি শসা বিভিন্ন ধরনের খাবার মুরগি মাছ ডিম টফু।

লেখকের মন্তব্য

ঘন বা অতিরিক্ত মাত্রায় প্রস্রাব হলে আমরা অনেক অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে যায় এই সমস্যাটি দিন দিন অনেক গুরুতর হয়ে উঠছে। ছোট থেকে বড় সব বয়সী মানুষের এই সমস্যা হচ্ছে তাই এই সমস্যা হলে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url