কি খেলে ঘুম হয়-১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়
সম্মানিত পাঠক কি খেলে ঘুম হয় ও ১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়। রাতের ঘুম আরাম তবে এটি হারাম হয়ে গেলে জীবন অনেক অবসাদপূর্ণ হয়ে ওঠে। সঠিক নিয়মে আরামদায়ক ঘুম হওয়ার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও সঠিক নিয়মে জীবনযাপন
ও শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে ঘুম খুব দ্রুত আমাদের চোখে চলে আসবে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাতে বিছানায় ঘুমানোর পর খুব বেশি সময় ফোন দেখা যাবে না।
ভূমিকা
সারাদিনের ক্লান্তিময় জীবনের পর রাতে খাবারের পরে বিশ্রামের জন্য বা ঘুমের জন্য বিছানায় আসলে আমরা অনেক চেষ্টা করি খুব দ্রুত ঘুমানোর কিন্তু খুব সহজে আমাদের চোখে ঘুম আসতে চায় না এই সমস্যাকে অনিদ্রা বলে এ সম্পর্কে জানতে নিচে আরো পড়ুন
কি খেলে ঘুম হয়
অতিরিক্ত মানসিক চাপ রাত জেগে মোবাইল ফোন টিপা বাজে অভ্যাস গুলোর জন্য আস্তে আস্তে আমাদের ঘুম এক সময় কমতে থাকে অনেক রাত হয়ে গেলেও বিছানায় ঘুমানোর পরেও ঘুম ধরে না। পরিপূর্ণ ঘুমানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক নিয়মে খাদ্যগ্রহণ ও নিয়মমাফিক জীবন যাপন করা। আমাদের শরীরে ঘুম একটি অমূল্যা সম্পদ।
সারাদিনের ক্লান্তি ও দৌড়ঝাপের পর রাতে ঘুমানোর পরে সঠিক নিয়মে ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে আমাদের শরীরের সঠিকভাবে কার্য সম্পাদন করতে পারেনা শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে এই জন্য নিয়ম করে ঘুম ভালো হয় এরকম খাবার গুলো খেতে হবে এই খাবারগুলি তালিকা হলো
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে অল্প কিছু পরিমাণে আখরোট খেয়ে নিতে হবে এতে ঘুমানোর পর আপনার ঘুম ভালো হবে এবং রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
- পিনাট বাদাম এর তৈরি মাখন বা ট্রিপটুফান উপাদান রয়েছে যা আমাদের ঘুম অনেক বৃদ্ধি করে এবং ভালো ঘুমের ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে দেয় না।
- ভুট্টার খই বা পপকর্নের মধ্যে রয়েছে হরমোন ক্ষরণ বৃদ্ধি করার উপায় এজন্য এটি খুব দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে বিষয়টি একটু অবাক হলেও অনেক কার্যকারী তবে খেয়াল রাখতে হবে এতে যেন তেল থাকে না।
- কলাতে রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা খাওয়ার ফলে আমাদের ঘুম খুব শীগ্রোয় আসে ।
- কমলা লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা শুধু রোগ প্রতিরোধ করতে সহায় না এটি আমাদের পায়ের ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে এজন্য রাতে কমলা লেবু খেয়ে ঘুমালে ঘুম অনেক ভালো হয়।
- চেরি ফলের জুস বা ব্লিন্ডার করে রস বের করে নিয়ে ঘুমানোর আগে খেতে হবে এতে রয়েছে মেলোটনিন উপাদান যা দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে।
- অনেক বেশি মাত্রা যুক্ত তেল ছাড়া মাছ আমাদের শরীরের সেরোটিনের ফর্ম বৃদ্ধি করে যার ফলে এই মাছ খেলে রাতের ঘুম অনেক ভালো হয় ।
১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়
পরের দিন সকালে সুস্থ সঠিক ফুরফুরুরে সতেজ মেজাজে কাজে মনোনিবেশ করার জন্য আগের দিন রাতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে আরামদায়ক ঘুম। কেননা সঠিক ভাবে ঘুম না হলে আপনার কাজে কোন মন বসবে না সবকিছু যেন অস্বস্তিকর মনে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে একই সমস্যা দেখা যায় যে রাতে বিছানায় ঘুমানোর পরও
আরও পড়ুনঃ কোন খাবার খেলে ঘন ঘন প্রস্রাব রোগ হয় না
খুব সহজে ঘুম আসতে চায় না এর জন্য পরের দিন শরীর অনেক ক্লান্ত থাকে। যা আমাদের শরীরের উপর মারাত্মক প্রেসার সৃষ্টি করে। এজন্য প্রয়োজন উপকারী কিছু খাবার যার মাধ্যমে রাতে ঘুমানোর পর খুব সহজেই অনেক দ্রুত চোখে ঘুম চলে আসে।
- আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি র ঘাটতে থাকলে খুব দ্রুত ঘুম আসতে চায় না এজন্য রাতে ঘুমানোর আগে একটি ডিম খেলে তা আমাদের মস্তিষ্কে একটি অংশে নিউরন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে যার ফলে ঘুম ভালো হয়।
- ক্যামোমাইল চা যা ঘুমের একটি প্রধান উপকারী ঔষধ। ঘুমোতে যাওয়ার কিছু সময় আগে ১ কাপ ক্যামোমাইল চা খেলে খুব দ্রুত ও অনেক আরামদায়ক ভাবে ঘুম চলে আসবে।
- মিষ্টি আলুতে রয়েছে পটাশিয়াম যা আমাদের দ্রুত ঘুমাতে সহায়তা করে। এজন্য একে ঘুমের পিসি বলা হয়।
- মধু আমাদের শরীরে মেলাটনিন ও সেরেটোনিন যা ঘুমের একটি প্রধান ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
- সব ধরনের ফলের স্যুপ যেমন বাদাম কিসমিস আপেল এসব একসঙ্গে স্যুপ তৈরি করে খেলে আমাদের শরীর অনেক সুস্থ ও সতেজ থাকবে এবং ঘুম অনেক দ্রুত ধরবে।
- সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নিজেকে সব ধরনের মানসিক ট্রেস ও চাপের হাত থেকে মুক্ত রাখতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা করতে হবে তাহলে রাতে খুব দ্রুত ঘুম আসবে।
রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম কি জানুন
সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে সুস্থ থাকার জন্য। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের এই ঘুমের পরিমাণ যদি ৬ ঘন্টার কম হয় তাহলে খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। ঘুম আমাদের শরীরে অনেক কার্যকারী উপাদান বৃদ্ধি করে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং টক্সিন হরমোন নামক উপাদান
আরও পড়ুনঃ কোন ফল খেলে ডায়াবেটিস হবে না
শরীর থেকে বের করে দিয়ে শরীরের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এজন্য সদ্য জন্ম লাভ কৃত বা ১ মাস থেকে ১ বছরে বাচ্চাদের দিনে ১৩ থেকে ১৬ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ২ থেকে ১০ বছরের বাচ্চাদের দিনে ৮ থেকে ১২ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। এবং একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির জন্য সারাদি্ররনে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
এই ঘুমের উপর নির্ভর করে যে আমরা পরের দিনের কাজ কেমন হবে করতে পারবো এবং আমাদের শরীর কতটুকু সুস্থ থাকবে। এজন্য রাতে ঘুমানো অনেক কার্যকর একটি বিষয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাতে ঘুম আসেনা খাবার খেয়ে বিছানায় ঘুমানোর পরও খুব সহজে ঘুম ধরতে চায় না । আর এই রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম "ইনসোমনিয়া" বা অনিদ্রা রোগ।
যার দরুন আমাদের শরীরে দিনের বেলা সারাদিন ঝিমুনি ভাব কাজে অমনোযোগী ও ঘুম ঘুম ক্লান্তি ভাগ মেজাজ অনেক খারাপ হয়ে যাওয়া সমস্যার সৃষ্টি হয়।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় জানুন
আমাদের শরীরের কোন একটি প্রধান বিষয়। যেমন ফোনে চার্জ না থাকলে ফোন অচল হয়ে যায় তেমনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে আমাদের শরীর ক্লান্ত ও অকার্যকরিতা পূর্ণ হয়ে থাকে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় জানুন। আমরা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় কাজ গুলি করার মাধ্যমে ঘুম কম হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে
কিন্তু আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকলে ঘুম কম হতে পারে। এবং ঘুম আসতে দেরি হতে পারে কারণ ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে এই হরমোন ঘুমের সঙ্গে অধিক সম্পর্ক যুক্ত যার ফলে এটি কম থাকে কম হয়। ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের একটি প্রধান কার্যকরী উপাদান
এটি থাকলে আমাদের শরীরে অবসাদ পেশিতে টান পড়া ও হাড়ের বিভিন্ন ধরনের ব্যঁথা তৈরি হতে পারে এজন্য ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি ৬ এর অভাব থাকলে আমাদের শরীরে ঘুম সঠিক নিয়মে হবে না এর জন্য এই ভিটামিনের অভাব থাকলে খুব দ্রুত তা পূরণ করার চেষ্টা করতে হবে।
রাতে ঘুম না হলে কি কি সমস্যা হয়
বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত পরিমাণে মোবাইল ফোনে গেমস খেলা ফেসবুক ও বিভিন্ন ধরনের ওয়েব সিরিজ ভিডিও দেখে রাত জেগে জেগে এক সময় অনিদ্রা রোগের সৃষ্টি হয়ে যায় । এই সময় বিছানায় ঘুমালে খুব সহজে আর ঘুম ধরে না। রাতে ঘুম না হলে কি কি সমস্যা হয় জানুন । রাতে সঠিক নিয়মে ও পর্যাপ্ত পরিমাণে
আরামদায়ক ঘুম না হলে আমাদের চোখের নিচে আস্তে আস্তে কালো দাগ পড়তে থাকে আর এই সমস্যাটি হয় ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি ৬ এর অভাবে।
- ভিটামিন ডি এর অভাবে আমাদের শরীরে মানসিক অবসাদ ও ক্লান্তি তৈরি হয়। তবে এই ভিটামিনের ঘাটতির অভাবে মনের কোন সংযোগ না থাকলেও শরীর খারাপ হলে আমাদের মন এমনিতেই খারাপ হয়ে যায়।
- ভিটামিন ডি এর অভাবে ঘুমের অভাব হলে দীর্ঘ সময় ঘুম না হলে আমাদের চোখের তলায় বিভিন্ন ধরনের কালো কালো দাগ পড়তে থাকে।
- অনেক গবেষণায় দেখা গেছে মানবদেহের পেশীর গঠনে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি এর জন্য এই ভিটামিনের অভাব থাকলে আমাদের পেশিতে অনেক টান পড়ে যার ফলে বেশি মজবুত হয় না
- ভিটামিন বি ৬ আমাদের শরীরের জন্য খুবই জরুরি একটি ভিটামিন। এই ভিটামিনের ঘাটতি আমাদের শরীরে হলে ঘুম সঠিক ভাবে হবে না এই ভিটামিন আমাদের দেহে কম থাকলে শরীর থেকে মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন হরমোন কম বের হয় এজন্য এই ভিটামিন বৃদ্ধি করার জন্য দুধ ডিম মাছ ও চিকেন খেতে হবে।
কোন ওষুধ খেলে দ্রুত ঘুম আসে জেনে নিন
কোন ওষুধ খেলে দ্রুত ঘুম আসে জেনে নিন। ঘুমের ওষুধ রয়েছে যা খেলে খুব দ্রুত সময় ঘুম চলে আসে তবে ওষুধগুলো স্পর্শকাতর। আমাদের বয়স ভেদে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ এইসব ঔষধ আমাদেরকে দিয়ে থাকেন কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত এইসব ওষুধ খাওয়া একদমই ঠিক না এগুলো খেলে আমাদের শরীরের
বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে যার মধ্যে রয়েছে নার্ভ কিডনি ও হার্ট। এই ওষুধগুলোর মধ্যে রয়েছে
- Mylum ৭.৫ তবে এই ওষুধ খেলে ৮ থেকে ১০ মিনিটের মাথায় মাথাঁ ঘুরাতে পারে
- Felfresh ও Pase-2
- Lexyl
- Zopiline
- Epinal
শেষ কথা
ঘুম আমাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। সঠিক নিয়মে পরিপূর্ণ ঘুম না হলে আমাদের শরীর অনেক ক্লান্তিময় ও অবসাদ পণ্য হয়ে থাকে যার ফলে প্রয়োজনীয় কাজ করতে মন বসে না। তবে এসব ক্লান্তি ভাব দূর করে ঘুম ভালো হওয়ার জন্য আমরা প্রাকৃতিক উপায় গুলো ব্যবহার করব বাজার থেকে কেনা ঘুমের ওষুধ খাব না এটা অনেক ক্ষতিকারক আমাদের জন্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url