আন্তর্জাতিক নারী দিবস-৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস
সম্মানিত পাঠক আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানুন। নারী আন্দোলন সর্বপ্রথম শুরু হয়েছিল আমেরিকাতে ১৯০৯ সালে তারপর এই আন্দোলনটি
১৯১০ সালে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল নারী সম্মেলন আন্দোলন হিসেবে এ সময় প্রায় ১৫ হাজার নারী কর্মী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন
ভূমিকা
ক্লারা জেটকিনের মাধ্যমে সর্বপ্রথম নারীদের গণ্য আন্দোলনের এই মনোভাব প্রকাশ পেয়েছিল। তিনি ১৯১০ সালের ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন এই দিনটিকে এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে নিচে আরও পড়ুন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস কি
আন্তর্জাতিক নারী দিবস কে পূর্বে বলা হতো আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস। প্রতিবছর এর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয় সারা পৃথিবীব্যাপী একটি প্রধান উপলক্ষ্য হিসেবে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে নারী দিবস উদযাপন করা হয় তাও নারীদের প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা মূল বিষয় ও আবার কোথাও
আরও পড়ুনঃ জিপিএফ ব্যালেন্স চেক করে কিভাবে জানুন
নারীদের রাজনৈতিক সামাজিক আর্থিক ও প্রতিষ্ঠানিক ভাবে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয় প্রকাশ পায়। এই দিবসটি মূলে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকারের আদায়ের সংগ্রাম এর ইতিহাস ১৮৫৭ সালে মজুরি বৈষম্য কর্ম ঘন্টা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধতা পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন
পতাকা নিয়ে কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিল বর্তমান সময়ের সরকার তার লেঠেল বাহিনীর মাধ্যমে দমন ও নিপীড়ন চালান। ১৯০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সোশ্যাল ডেমোক্রেড নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে নতুন করে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নারী নেত্রীদের নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শহর কোনটি জানুন
এর প্রায় এক বছর পর ১৯৯০ সালে ডেনমার্কের ওপেন হেগেনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন দ্বিতীয় পর্ব। ১৭ টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী এই প্রতিনিধি এই সম্মেলনে যোগদান করেছিলেন। এই সমন্বয়ে সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন এক বছরের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেন। এর পর সমসাময়িকভাবে
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ১৯১১ সাল থেকে এই নারীদের সম অধিকার দিবস হিসেবে এই দিনটি পালন করা হবে। এরপর দিবসটি পালনে এই আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিরা । ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দেও থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হতে শুরু করে। তবে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের আগে থেকেই এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস
৮ই মার্চ আসলে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনে সারা বিশ্ব একটি অন্যরকম উৎসবমুখর পরিবেশে চলে যায় । তবে এই দিনটির গুরুত্ব কতটুকু বা এই দিনটি কিভাবে আসলো ও এই দিনে নারীদের গুরুত্ব তা জেনে নেওয়া যাক। আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুরু হয়েছিল শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে যা পরবর্তীতে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয়
আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে। আর এর শুরু হয়েছিল ১৯০৯ সালে নিউইয়র্কের রাস্তায় প্রায় ১৫ হাজার নারী নেমে কর্ম ঘন্টা কমানোর ও বেতন বৃদ্ধি করার ভোটের অধিকার আদায়ের দাবি করেছিলেন। এর প্রায় এক বছর পরই সোশালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের।
এই আন্দোলনে সর্বপ্রথম সবার সামনে আন্দোলন করেছিলেন ক্লারা জেটকিন ১৯১০ সালে কোপেন হেগেনের নারী শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। এখানে উপস্থিত ছিল প্রায় ১৭ টি দেশের ১০০ জন নারী তাদের সবার সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব তিনি পেশ করেন। তবে সর্বপ্রথম নারী দিবস পালন করা হয়েছিল
জার্মানি অস্ট্রিয়া ডেনমার্ক সুইজারল্যান্ড এইসব দেশগুলোতে। এই দিবসের শতবর্ষ অনুষ্ঠান উদযাপিত হয় ২০১১ সালে। এই দিবসটি সর্বোপরি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ এটা উদযাপন করে সম্মাননা প্রদান করেন। এবং প্রথমবার এই দিবসের এটি প্রতিপাদ্য বিষয় ঠিক করা হয় ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ এই দিবসটিকে পালন
করে ''অতীতের উদযাপন ভবিষ্যৎ ঘিরে পরিকল্পনা'' এই স্লোগান দিয়ে। লারা জেটকিন ৮ই মার্চ এই দিনটি প্রস্তাব করেন তিনি কোন নির্দিষ্ট তারিখের কথা বলেননি। ১৯১৭ সালের আগ পর্যন্ত এই তারিখটিও নির্দিষ্ট ছিল না প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় রাশিয়ার নারীরা রুটি ও শান্তির দাবিতে এক আন্দোলন শুরু করে টানা চার দিন ধরে চলা সেই আন্দোলন
বেশ কিছু দিন পর অবসান ঘটে অন্তর পূর্তি কালীন সরকার সেই সময় নারীদের ভোটের অধিকার মেনে নেয়। যেদিন এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল রাশিয়াতে সেই দিন জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখ ছিল ২৩ শে ফেব্রুয়ারি রোববার। আর এই দিনটা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ছিল ৮ই মার্চ তারপর থেকে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস
হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে এই দিনের রং হচ্ছে বেগুনি সবুজ ও সাদা এজন্য বেশিরভাগ সময় এই দিনে মেয়েরা বেগুনি রঙের শাড়ি পরে যা ন্যায় বিচার ও মর্যাদার প্রতীক। সবুজ দিয়ে বোঝায় আশা আর সাদা মানে পবিত্রতা। যদিও এইসব রংগুলো নিয়ে একটু বিতর্কতা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস কবে
আন্তর্জাতিক নারী দিবস কবে জানুন। সারা পৃথিবীতে ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। এই দিনে নারী দিবস উপলক্ষে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে সরকারি ছুটি থাকে। রাশিয়াতে এই দিন সরকারি ছুটি থাকে। এবং ৮ ই মার্চকে ঘিরে আগামী তিন থেকে চার দিন ফুল বিক্রি আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। চীনের স্টেট কাউন্সিলের নির্দেশনা অনুযায়ী ৮ই মার্চ
অনেক নারী অর্ধ দিবস ছুটি পেয়ে থাকেন । ইতালিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে বলা হয় লা ফেস্তা দিলা দোনা লজ্জাবতী ফুল দেওয়ার মাধ্যমে দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে। এবং যুক্তরাষ্ট্রে পুরো মাসকেই নারীদের ইতিহাসের মাস হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। ১৯৯০ সালে ক্লারা জেটকিন নিউইয়র্কের রাস্তায় প্রায় ১৭ টি দেশের ১০০ জন নারীকে নিয়ে নারীদের
গণআন্দোলনে উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের সর্বসম্মতিক্রমে ৮ই মার্চকে তিনি আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হিসেবে ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে এই দিনটি বিভিন্ন সময়ে পালিত হয়ে থাকলেও ১৯১৭ সালের পর থেকে ৮ই মার্চ কে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এবং ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ সারা বিশ্বকে ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করার জন্য ঘোষণা দেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয়
সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয় জানুন। এ বছরে নারী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ''নারীদের উপর বিনিয়োগ করুন দ্রুত উন্নতি আনুন'' এর প্রধান মাধ্যম হলো লিঙ্গ সমতা আনতে যে যথেষ্ট অর্থবিনিয়োগ করা হচ্ছে না সে বিষয়টাতে
মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। সংঘাত ও দ্রব্যমূল্যে বৃদ্ধি২০২৫ সালনাগাদ বিশ্বের প্রায় ৭৫ শতাংশ দেশেই জনগণের জন্য রাষ্ট্রের ব্যয় কমিয়ে আনতে পারে। জাতিসংঘের তথ্য মতে ২০৩০ সাল নাগাদ লিঙ্গ সমতা আনতে হলে এখন থেকে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৩৬০ বিলিয়ন ইউএস ডলার বিনিয়োগ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের তাৎপর্য কী
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের তাৎপর্য কী। সারা পৃথিবীতে গত বছর ইরান ইউক্রেন আফগানিস্তান যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের অনেক দেশের নারীরা যুদ্ধ সহিংসতা নীতি পরিবর্তনের কারণে তাদের অধিকারের দাবি আদায়ের লড়াই করছেন। বর্তমান সময়ে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার চলমান সংঘাতে মধ্যপ্রাচ্যের নারীরা ভয়াবহ সহিংসতার
মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন তারা গাজায় নারী ও শিশুদের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ইসরাইল সেনাদের দ্বারা ধর্ষণের ঘটনা মত গুরুতর অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন। একই সঙ্গে ৭ই অক্টোবর ইসরাইলের হামলায় থমাসের দ্বারা ধর্ষণ যৌন সহিংসতা এবং নারীদের অঙ্গ-কর্তনের প্রমাণ ও পেয়েছে বিবিসি।
এছাড়াও আফগানিস্তানের মেয়েদের প্রাইমারি স্কুলের বয়সসীমা পার হলেই তারা স্কুলে নিষিদ্ধ হয়েছে তালিবান্ধের দ্বারা যা মেয়েদের সম অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস কোনটি
আন্তর্জাতিক নারী দিবস কোনটি জানুন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয় ৮ই মার্চ। প্রতিবছর এই দিনটিতে সারা বিশ্বের নারীদের এটি সম্মাননা প্রদান করা হয়। নারীদের সম্পর্কে সম্মাননা ও সমাজকে সচেতন করতে মূলত এই দিবসটি উদযাপিত হয়। সমাজের সকল স্তরের নারীদের সাফল্যের জয়গান গাওয়ার জন্য এই দিন কে নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয় ১৯০৯ সালে সর্বপ্রথম নারী দিবস পালন করা হয়েছিল।
শেষ কথা
এ পৃথিবীতে মহান আল্লাহ নারী ও পুরুষকে অনেক সম্মানীয় স্থানে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আমরা সব সময় নারীকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করব তাদের সংঙ্গে কখনো খারাপ আচরণ বা অসন্মান করবো না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url