আঁচিল দূর করার ক্রিম-আঁচিল দূর করার ঔষধ
প্রিয় পাঠক আঁচিল দূর করার ক্রিম ও আঁচিল দূর করার ঔষধ এর নাম জেনে নিন। আমাদের ত্বকের ওপরে এই রোগ হলে আমরা একটু অস্বস্তিকর পরিবেশে চলে যাই। সব সময় নিজের সৌন্দর্য নিয়ে একটু সমস্যার মধ্যে পড়ে যায় তাই এই রোগ দূর করার জন্য
বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা গ্রহণ করার চেষ্টা করে থাকি। এই সব চিকিৎসা নিয়ে আমরা বেশিরভাগ সময় উপকৃত হয়ে থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই খুব সহজে এই রোগ দূর হতে চায় না।
ভূমিকা
আঁচিল দূর করা অনেক কষ্টসাধ্য একটি বিষয়। এটি ত্বকের ওপরে একবার সৃষ্টি হলে খুব সহজে তা দূর হতে চায় না। এর জন্য অনেক ধরনের ওষুধ ও ক্রিম ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ সময়ই কোন ওষুধ ও ক্রিমে এই রোগ দূর হয় এ বিষয়টি জানিনা। এই রোগ ভালো করার ক্রিম ও ঔষধের নাম জানতে নিচে আরো পড়তে থাকুন।
আঁচিল দূর করার ক্রিম
আমাদের ত্বকের উপরে আঁচিল একটি গুরুতর সমস্যা। এই সমস্যা ত্বকের উপরে একবার সৃষ্টি হলে খুব সহজে তা নির্মূল হতে চাই না। এটি আমাদের ত্বকের সৌন্দর্যতা নষ্ট করে দেয়। এটি দূর করা ক্রিমের নাম হলো
আরও পড়ুনঃ পা ফাট দূর করার ক্রীমের নাম জানুন
- BBP Wartol ক্রিম 25mg
- ক্রায়োথেরাপি ভিত্তিক ক্রিম
- স্যালিসিলিক অ্যাসিড ভিত্তিক ক্রিম
- Wart Remover Ointment 20mg
- নেভি নো মোর
- বায়ো-টি হারবালস
- ডারমাটেন্ড
- এইচ-মোল ফর্মুলা
- Aristoderm Cream
আঁচিল দূর করার ঔষধ
এটি একটি বিদঘুটে সমস্যা ত্বকের জন্য। এটি একবার ত্বকের উপরে সৃষ্টি হলে খুব সহজে তা আর ভালো হতে চাই না। এই রোগ ভালো করার জন্য বিশেষ কিছু উপায় অবলম্বনের পাশাপাশি ওষুধ ব্যবহার করতে হয় তাহলে এটি খুব দ্রুত নির্মূল হয়ে যায়। এই রোগ ভালো করার ঔষধ এর নাম হল
আরও পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা জানুন
- ওয়ার্টফ
- ফ্লাকোনাজোল-Fluconazole 50mg Tab.
- ইকোনাজোল- Cream
- Mycofree 250 mg Tab
- Cetrizine 10 gm
আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ
আঁচিল সমস্যা হলে বেশিরভাগ মানুষই সহজ ও নিরাপদ চিকিৎসা গ্রহণ করার চেষ্টা করে। এর মাধ্যমে খুব দ্রুত এই রোগ ভালো করার চেষ্টা করে থাকে। এজন্য বেশিরভাগ সময় হোমিওপ্যাথির ওষুধের কথা চিন্তা করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই হোমিও ঔষধ গুলো ব্যবহার করে থাকে। এই রোগ এর জন্য খুব দ্রুত কাজ করে থাকে এজন্য
আরও পড়ুনঃ পা ফটা দূর করার উপায় জানুন
আজকে এই পোস্টটিতে আপনাদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু এই রোগের হোমিওপ্যাথিক ওষুধের নামের তালিকা জানাবো। আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ এর নাম
- নাইট্রিকাম অ্যাসিডাম- Nitricum Acidum
- ন্যাট্রাম মুর- Natrum Mur
- থুজা অক্সিডেন্টালিস-Thuja Occidentalis
- সিলিসিয়া টেরা- Silicea Terra
- ফেরাম পিক্রিকাম- Ferrum Picrium
- গ্রাফাইটস- Graphaits
- কস্টিকাম- Causticum
- এন্টিমোনিয়া অশোধিত- Antimonium Crude
- স্ট্যাফিসাগ্রিয়া- Staphaisagria
আঁচিল দূর করার উপায়
সাধারণ ধরনের আঁচিলের জন্য খুব সহজে চিকিৎসা গ্রহণ করা অতীব জরুরি নয়। এই এই রোগ গুলো একটু সময় পর নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। এজন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে ধৈর্য ধরতে হবে। এজন্য প্রায় ১৮ মাসের মত সময় লাগে। এটি শারীরিক কোন সমস্যা বা স্বাস্থ্য ঝুঁকি ঘটায় না কিন্তু ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করার জন্য সকলেই
এই রোগটিকে অপছন্দ করে। নিজের শরীরে এই রোগ থাকুক এটা কেওই চায়না। আঁচিল দূর করার উপায় নিচে দেওয়া হল
- পেঁয়াজের রসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া মেরে সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। এজন্য পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে নিয়ে এর রস তৈরি করে নিতে হবে এরপর পরিষ্কার তুলা দিয়ে এটির উপরে ধীরে ধীরে লাগাতে হবে তাহলে খুব দ্রুত এই রোগ নির্মূল হয়ে যাবে এই প্রক্রিয়াটি নিয়মিত করতে হবে।
- রসুন এ রয়েছে এলিসিড নামক উপাদান যা একটি অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান হিসেবে আমাদের শরীরে কাজ করে। তাই রসুন পিষে এটির উপরে লাগালে খুব দ্রুত এটি ভালো হতে থাকবে।
- অ্যাপেল সিডার বা ভিনেগার ভেজানো তুলো দিয়ে আস্তে আস্তে এই রোগের উপরে রেখে রাতে ঘুমাতে হবে। এরপর সকালে উঠে তা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ভিনিগারে বিদ্যমান আছে প্রচুর পরিমাণে এসিড যা মুখের ত্বকের এই সমস্যা কমাতে খুব দ্রুত সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়াটি প্রত্যেক সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় দিন করতে হবে।
- দাঁত ব্রাশে ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম মাখিয়ে আলতো ভাবে এটির উপরে ধীরে ধীরে ঘষতে হবে এটা নিয়মিত দিনে ২ বার করতে হবে। ডিম এটির ওপরে একটি সুরক্ষা কবজ সৃষ্টি করে। ২ সপ্তাহ আচলে কোন সাবান লাগানো যাবে না। এই প্রক্রিয়াটি প্রায় ২ সপ্তাহ অবলম্বন করতে হবে।
আঁচিলের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা
এই রোগ দূর করার জন্য আমরা অনেক ধরনের চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকি। না বুঝে না জেনে সঠিক চিকিৎসা না নিয়ে অনেক অর্থ ব্যয় করে ফেলি। কিন্তু তারপরও তারপরেও কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায় না। এজন্য আজকে এই পোস্টটিতে আঁচিলের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা ওষুধের নাম জানাবো
- Salicid Cream - স্কোয়ার
- Kerasol Cream- ইনসেপ্টা
- Salidex Cream- এস কে এফ
- Keranil Cream- ইবনে সিনা
আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায়
এই রোগ ত্বকের উপরে একটি বিদঘুটে রূপের সৃষ্টি করে। সুন্দর ত্বকের উপরে এটি সৃষ্টি হলে সেই ত্বকটি দেখতে অসুন্দর হয়ে যায়। মুখে ত্বকের উপরে এই রোগ থাকুক এটা কেউই চায় না। এজন্য আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনাদের জানিয়ে দেবো।
- ভেষজ গুণাগুণ সমৃদ্ধ মধু ও অ্যালোভেরা প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান দিয়ে আসছেন। মুখের ত্বকের উপরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে মধু অ্যালোভেরা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দুই ধরনের কাজ করে থাকে। যা আমাদের ত্বকের ব্যাকটেরিয়া দূর করে ত্বক মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। এজন্য এক চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ এলোভেরা জেল একসঙ্গে মিক্স করে তুলার সাহায্যে এই মিশ্রণটি এই রোগের উপরে আলতো করে লাগাতে হবে। প্রতিদিন ৩ বার করে এই প্রক্রিয়ায় অবলম্বন করতে হবে।
- রসুন এটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধী উপাদান এটি আমাদের রান্নার কাজে ব্যবহৃত হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে ঠিক তেমনি এই রোগের জন্য রসুন পিষে এটির উপরে লাগালে রসুনের মধ্যকার সালফার এর বিশেষ যৌগ খুব দ্রুত এই রোগ ভালো করতে কাজ করে।
- পেঁয়াজের রস ৩ চামচ ও ১ চামচ মধু ও ১ চামচ লেবু একসঙ্গে মিক্স করে। পরিষ্কার তুলা দিয়ে এই মিশ্রণটি এটির উপরে হালকা করে লাগাতে হবে রাতে ঘুমানোর সময় এবং সকালে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে নিয়মিত এই মাধ্যমটি অবলম্বন করলে খুব দ্রুত এই রোগ নির্মূল হবে।
- ক্যাস্টর অয়েল এবং বেকিং পাউডার একসঙ্গে মিক্স করে মুখের ত্বকে লাগালে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস খুব দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য ১ চামচ বেকিং পাউডার এবং ১ চামচ ক্যাস্টর অয়েল একসঙ্গে মিক্স করে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে এই পেস্টটি এই রোগের উপর নরম ভাবে লাগাতে হবে এবং এটি শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করে। শুকানোর পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে প্রায় ১ মাস প্রক্রিয়াটি নিয়মিত করলে এই রোগ একেবারে দূর হয়ে যাবে
- ভিটামিন সি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। ঠিক তেমনি ত্বকের এই রোগ দূর করার জন্য ভিটামিন সি ভীষণ কার্যকরী। এজন্য লেবু মালটা কিংবা কমলার খোসা নিতে হবে এই খোসাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে এগুলো এই রোগের উপর হালকা করে ঘষতে হবে। এবং খোসা পিষে পেস্ট তৈরি করে এটির উপর আস্তে আস্তে লাগাতে হবে তাহলে খুব দ্রুত এই রোগ ভালো করতে সাহায্য করবে।
- কাঁচা গোল আলু সুন্দর করে কেটে এটি আঁচিলের ওপর আস্তে আস্তে ঘষতে হবে। এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদানের কারণে এটি খুব দ্রুত ভালো হয়ে যাবে।
- কলার খোসা এই রোগ দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঔষধি উপাদান। এজন্য কলার ভেতরের অংশ বাদ দিয়ে খোসার ভেতরের অংশ প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার এই রোগের উপরে ধীরে ধীরে ঘষতে হবে এবং খোসার পেস্ট বানিয়ে ঘুমানোর আগে এটির উপরে লাগিয়ে সকালে ধুয়ে নিতে হবে তাহলে এটির খুব দ্রুত নির্মূল হবে।
- পানির সঙ্গে শুকনা মরিচ পিষে মিক্স করে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে । এই পেস্টটি এই রোগের উপর প্রতিদিন দুইবার করে লাগাতে হবে অন্তত দুই সপ্তাহ নাগাদ। এটি লাগানোর ফলে এই রোগ ছোট হতে থাকবে।
- একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে এরপর ফুটন্ত পানিতে এই রোগের অংশটুকু ততক্ষণ অবধি ডুবিয়ে রাখতে হবে যতক্ষণ অবধি ব্যথা সৃষ্টি না হয়। এবং সঙ্গে সঙ্গে গরম পানি থেকে তুলে এটির উপরে ঠান্ডা কিছু প্রয়োগ করুন প্রতিদিন তিনবার করে এই উপায় অবলম্বন করতে হবে অন্তত দুই সপ্তাহ ধরে।
শেষ কথা
আমাদের এত সুন্দর ত্বকের উপরে কোন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হলে আমরা অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ি। এই রোগ একটি গুরুতর সমস্যা। এই রোগটি সৃষ্টি হলে খুব সহজে দূর হতে চায় না। এটি দূর করার বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ও উপায় জেনে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে এই তথ্যটি শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url