রুই মাছ ও রুই মাছের বৈশিষ্ট্য জানুন
সম্মানিত পাঠক রুই মাছ ও রুই মাছের বৈশিষ্ট্য জানুন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সকল জেলাগুলোতেই পুকুরে বা খালে বিলে নদীতে এই মাছ পাওয়া যায় এ মাছের চাহিদা অনেক বেশি থাকায় আমাদের দেশের বাইরেও বিভিন্ন দেশগুলোতে এই মাছ চাষ হয়ে থাকে এই মাছের
বিস্তার দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এর স্বাদ ও বাণিজ্যিকভাবে অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য ।
ভূমিকা
এই মাছ আমরা সাধারণত রান্নাই বিভিন্ন সবজির সঙ্গে রান্না করে খেয়ে থাকি। এই মাছের টেস্ট খুবই সুস্বাদু এ মাছটি আমরা রান্না করে খেতে পারি । তবে খেয়াল রাখতে হবে এই মাছ খাওয়ার সময় আমরা যেন কাঁচা অবস্থায় না খেয়ে ফেলি সঠিকভাবে রান্না করে সেদ্ধ করে খেতে হবে এই মাছ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে নিচে আরও পড়তে থাকুন
রুই মাছ
আমাদের বাংলাদেশের অতি পরিচিত একটি মাছ রুই । যা আমাদের বাংলাদেশের প্রধান মাছ গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই মাছটি খেতে অনেক সুস্বাদু ও সুপ্রিয়। এই মাছ বাংলাদেশের প্রায় সকল স্থানগুলোতেই পাওয়া যায় এ মাছের চাহিদা অনেক বেশি থাকায় এর চাষ আমাদের দেশে ব্যাপক পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ।
আরও পড়ুনঃ আশঁ যুক্ত খাবার কি কি জানুন
এই মাছে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। এই মাছে রয়েছে ভিটামিন এ ই ডি এছাড়াও এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম আয়রন সোডিয়াম জিংক ও খনিজ।
রুই মাছের বৈশিষ্ট্য জানুন
আমাদের দেশে মোট তিন ধরনের বড় কার্প জাতীয় মাছ পাওয়া যায় এর মধ্যে রয়েছে রুই মৃগেল ও কাতলা। এ মাছটি আমাদের দেশের মিঠা পানিতে খুব বেশি পরিমাণে বর্ধনশীল ও এ মাছের মাথায় কোন ধরনের আইশঁ থাকে না এদের পেটের ভেতরের গহব্বরে এক ধরনের পটকা থাকে যা দেখে কার্প জাতীয় মাছ চিহ্নিত করা যায় বড় ধরনের
আরও পড়ুনঃ চীয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা জানুন
কার্প জাতীয় মাছ গুলো আমাদের দেশে খুব বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় । এ মাছটি আমাদের দেশ সহ ভারত পাকিস্তান ও মায়ানমারের বিভিন্ন নদীর উপবাহিকায় বিভিন্ন ধরনের রুই মাছের প্রজাতি পাওয়া যায় এছাড়াও পুকুরে মোহনায় হ্রদ ও ছোট বড় নদীতে এই মাছ খুব ভালো জন্মলাভ করে এবং বেড়ে ওঠে। এছাড়াও আমাদের দেশগুলোর বাহিরে
বাণিজ্যিকভাবে ও অর্থনৈতিক ও শারীরিক পুষ্টির অভাব মেটাতে চীন জাপান রাশিয়া শ্রীলঙ্কা ফিলিপাইন মালয়েশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশগুলোতে এই মাছের চাষ হয়ে থাকে এবং বহির বিশ্বে এই মাছটি রপ্তানি করে অধিক অর্থ লাভ করা সম্ভব হচ্ছে। এই মাছগুলো শাকাসি এরা সব সময় পানির মধ্যস্তরের জীবন যাপন ও চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।
এবং অধিক শক্ত ও পুরো ঠোট এর কারণে পানির তলদেশের বিভিন্ন ধরনের জলজ উদ্ভিদ পচাঁ ও জৈব পদার্থ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় প্ল্যাংটন ও ছোট মাছ খাদ্যদ্রব্য গুলো খেয়ে থাকে। এছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার সময় পুকুরে খৈলের গুড়া ফিস মিল কুঁড়া ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এই মাছ খেতে অনেক সুস্বাদু এতে রয়েছে
- জলীয় অংশ ৯.৫৬ শতাংশ
- ক্যালসিয়াম ৭৪ শতাংশ
- পটাশিয়াম 650 মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম ২৮৮ মিলিগ্রাম
- কলিন ১০১ মিলিগ্রাম
- এছাড়াও রয়েছে ৮১৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ফসফরাস আয়রন ইত্যাদি
এর বৈশিষ্ট্যঃ
- এই মাছের মাথা বড় ও চোখ ছোট
- এই মাছের দেহেও রুপালি রংয়ের এবং এটির পেট ধূসর সাদা
- এই মাছের পৃষ্ঠ পাকনা লম্বা ও ধারালো
- এই মাছের ঠোঁট মোটা ও চোয়ালের দুই জোড়া দাঁত রয়েছে
- এ মাছের লেজ দীর্ঘ এবং কাটাযুক্ত
রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম কি
রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম কি জেনে নিন। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল ( Labeo Rohita ) ।
রুই মাছের ইংরেজি নাম
আমাদের দেশে বহুল পরিচিত একটি মাছ হলো রুই মাছ এই মাছের বিস্তার দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সকল দেশগুলোতে রয়েছে স্বাদ ও পুষ্টি গুনে প্রায় সব মাছগুলোর সঙ্গে সমান ভাবে এগিয়ে এই মাছের পরিসংখ্যান এই মাছের ইংরেজি নাম জেনে নিন। রুই মাছের ইংরেজি নাম হল ( Rohu Carp )
রুই মাছের উপকারিতা
রুই মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন। আমরা বাঙালির জাতি আমাদের মাছে ভাতে বাঙালি বলা হয় কারণ আমরা সব ধরনের রান্নার তরকারির সঙ্গে মাছ রাখতে এবং খেতে অনেক পছন্দ করি এজন্য আমরা প্রায় প্রতিদিনই রান্নায় মাছ ব্যবহার করি যেটি অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এই মাছ খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকারী উপাদান পাওয়া যায় যেগুলোর মধ্যে রয়েছে
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
- কগনেটিভ কর্মক্ষমতা বাড়ায়
- ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে
- আমাদের শরীরের ত্বকের জেলা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে
- মানবদেহের হাট সুস্থ ও চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে
- আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের জয়েন্টের ব্যাথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে
রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
উপকারিতাঃ
- এই মাছে রয়েছে ওমেগা থ্রি-ফ্যাটি অ্যাসিড যা আমাদের হাটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে
- এই মাছে বিদ্যমান রয়েছে ভিটামিন বি১ বি২ বি৩ বি৫ বি৬ ও বি১২ যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে
- এই মাছে থাকা ভিটামিন আমাদের চোখের সুস্বাস্থ্য ও দৃষ্টি শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে
- এই মাছে থাকা ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও জিংক এর কারণে মানব দেহের হাড়ের স্বাস্থ্য গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের মতো রোগ দূর করতে সাহায্য করে এর মধ্যে থাকা প্রোটিন ও ফাইবার এর কারণে
অপকারিতাঃ
- খুব বেশি পরিমাণে এই মাছ খেলে আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দ্রুত ওজন বাড়তে পারে
- যাদের শরীরে এলার্জির সমস্যা আছে এইসব মানুষদের এই মাছটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এতে রয়েছে এলার্জি যা খেলে আমাদের শরীরে চুলকানি ফুসকুড়ি শ্বাসকষ্ট বমি বমি ভাব ও ত্বকে লাল ভাব দেখা দিতে পারে
- আমরা বিভিন্ন সময় বাজার থেকে কেনা মাছ খেয়ে থাকি কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের লক্ষ্য রাখতে হবে যে এসব মাছ অনেক সময় অনেক দূষিত বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী পদার্থ দিয়ে মেরে তারপরে বাজারে বাজারজাত করা হয় আর যা খেয়ে আমরা খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি এজন্য মাছ কেনার আগে সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
আমাদের দেশে অনেক পরিচিত একটি মাছ রুই যা খেতে অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এই মাছ আমাদের দেশে প্রায় সকল জেলাগুলোতেই পাওয়া যায় এ মাছ চাষ পদ্ধতি অনেক সহজ ও খুব দ্রুত বর্ধনশীল হওয়াতে এই মাছের চাষের বিস্তার দিন দিন খুব বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বাজার থেকে কেনার সময় অবশ্যই সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে টাটকা মাছ কেনার চেষ্টা করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url