পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে বিস্তারিত জেনে নিন
সম্মানিত পাঠক পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে বিস্তারিত জেনে নিন। আমরা চিকিৎসার জন্য বা বিদেশ ভ্রমণের জন্য জরুরী কিছু প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বাইরের দেশগুলোতে যেতে চাইলে আমাদের নিজস্ব পাসপোর্ট এর প্রয়োজন। কিন্তু পাসপোর্ট সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই পুরোপুরি ধারণা নেই
আর সেজন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়ে থাকি পাসপোর্ট তৈরির বেশ কিছু নিয়ম আপডেট হয়েছে এইসব নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট তৈরির বিশেষ কিছু তথ্য বিস্তারিতভাবে নিচে জানানো হলো।
ভূমিকা
আমরা বর্তমান সময়ে পাসপোর্ট তৈরি করতে গেলে এমআরপি পাসপোর্ট এর ই পাসপোর্ট ইস্যু করতে হয়। এমআরপি পাসপোর্ট এখন আর তৈরি করা সম্ভব না । এশিয়ার দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম আমাদের বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট সর্বপ্রথম চালু হয়েছে। পাসপোর্ট এর ধরন হলোঃ
- শিশুদের জন্য পাসপোর্ট
- প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পাসপোর্ট
পাসপোর্ট তৈরীর বিস্তারিত নিয়মাবলীর তথ্য জানতে নীচে আরো পড়ুন।
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে বিস্তারিত জেনে নিন
পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম কানুন ২০২৩ সালের অনুমোদিত নিয়ম অনুসারে বিস্তারিত তথ্য নিচে জানুন। পাসপোর্ট করতে যেসব কাগজ পাতি লাগে সেগুলো হলোঃ
আরও পড়ুনঃ জমির খাজনা চেক করার নিয়ম জানুন
- পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন সামারি কপি (প্রিন্ট কপি)
- ই-পাসপোর্ট এর আবেদন অনলাইন কপি (প্রিন্ট কপি)
- পাসপোর্ট ফ্রি প্রদানের স্লিপ (মূল কপি- প্রিন্ট কপি)
- জাতীয় পরিচয় পত্র এন আই ডি [ NID ] অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ {BRC English Version} (ফটোকপি ও মূল কপি)
- পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি এবং (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক)
- নাগরিক সনদ
- পেশা প্রমাণের সনদ
- পূর্বের পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং মূল কপি (যাদের আগের পাসপোর্ট আছে)
ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
আমরা অনেকেই পাসপোর্ট করতে চাই । কিন্তু পাসপোর্ট করতে কত টাকা প্রয়োজন আমরা তা জানিনা এজন্য ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে বিস্তারিত জেনে নিন।
আরও পড়ুনঃ নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানুন
- ৫-বছর মেয়াদে ৪৮ পৃষ্ঠার রেগুলার ডেলিভারি ১৫ থেকে ২১ দিন ৪ হাজার ২৫ টাকা ,এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৫ থেকে ৭ দিন ৬ হাজার ৩২৫ টাকা , সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ২ দিন ৮ হাজার ৬২৫ টাকা।
- ৫-বছর মেয়াদে ৬৪ পৃষ্ঠার রেগুলার ডেলিভারি ১৫ থেকে ২১ দিন ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৫ থেকে ৭ দিন ৮ হাজার ৬২৫ টাকা , সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ২ দিন ১২ হাজার ৭৫ টাকা ।
- ১০-বছর মেয়াদে ৪৮ পৃষ্ঠার রেগুলার ডেলিভারি ১৫ থেকে ২১ দিন ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৫ থেকে ৭ দিন ৮ হাজার ৬২৫ টাকা , সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ২ দিন ১০ হাজার ৩৫০ টাকা ।
- ১০-বছর মেয়াদে ৬৪ পৃষ্ঠার রেগুলার ডেলিভারি ১৫ থেকে ২১ দিন ৮ হাজার ৫০ টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৫ থেকে ৭ দিন ১০ হাজার ৩৫০ টাকা , সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ২ দিন ১৩ হাজার ৮০০ টাকা ।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে জেনে নিন।
- প্রথম ধাপেঃ ঢুকতে হবে আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন যে লিংকটিতে ভিজিট করতে হবে E-Passport Application. এর নিচে একটি পেজ দেখা যাবে সেখানে আপনার নিজ জেলা ও থানার নাম সিলেট করতে হবে । এরপর আপনাকে আপনার ইমেল ভেরিফিকেশন করতে বলবে আপনার ইমেইল এড্রেসটি এই ফর্মে লিখে নিচে রোবট ভেরিফিকেশন অপশনে পিক দিয়ে কন্টিনিউ বাটন এ ক্লিক করতে হবে।
- দ্বিতীয় ধাপেঃ ইমেইল ভেরিফিকেশন করার জন্য পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে আপনাদের ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিংক পাঠাবে আপনাকে সেই লিংকে ক্লিক করতে হবে এবং ইমেইলটি ভেরিফাই করতে হবে।
- তৃতীয় ধাপেঃ আপনাদের ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে ভেরিফিকেশনের পরে পুনরায় আবার ওয়েবসাইটে লগইন করতে হবে এবার (Apply for a New Passport)বাটনে ক্লিক করতে হবে (Passport Type) হিসেবে সাধারণ পাসপোর্ট হলে (Ordinary) এবং সরকারি আদেশে বা (NOC) এর মাধ্যমে পাসপোর্ট (Official) সিলেক্ট করতে হবে এরপরে (Save and continue)-ক্লিক করতে হবে।
- এরপরে নিচে আরেকটি পেজ শো করবে সেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ইংরেজিতে সঠিক নিয়মে পূরণ করতে হবে। এই পেজটিতে আপনার নাম জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি কার্ডের নম্বর তথ্য দিয়ে সেভ এন্ড কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর সর্বশেষ আপনাকে আইডি ডকুমেন্টস ধাপে আপনার আগের পাসপোর্ট আছে কিনা এই তথ্যটি দিয়ে যাচাই করে নিতে হবে আগে অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট আছে কিনা এবং জাতীয় পরিচয় পত্র জন্ম নিবন্ধনের তথ্য দিতে হবে আপনার পূর্বের কোন পাসপোর্ট থেকে থাকলে (Yes) অথবা না থাকলে (No) "I don't have any previous/ handwritten passport"
ই-পাসপোর্ট করতে কি লাগে এবং কত টাকা লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইলেকট্রনিক ই পাসপোর্ট এর যুগে প্রবেশ করে ফেলেছে। পৃথিবীর বুকে আমাদের বাংলাদেশ ১১৯ তম দেশ হিসেবে ই পাসপোর্ট চালু করতে সক্ষম হয়েছে। আর এই অনলাইন ব্যবস্থাপনাটা এতটাই সহজ যে ঘরে বসেই আমরা এই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারব।
ই-পাসপোর্ট করতে কি লাগে এবং কত টাকা লাগে বিস্তারিত জেনে নিন। কি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এবং কি লাগে সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো তবে ই পাসপোর্ট জমা দেওয়া বা সাবমিট করার পর যদি কোন ভুল হয় তাহলে আপনারা তা আর সংশোধন করার সুযোগ পাবেন না আর সবচাইতে বড় বিষয় একটি
এন আইডি কার্ড দিয়ে একবারই মাত্র ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। পাসপোর্ট করতে কত টাকা প্রয়োজন তা হলঃ
বাংলাদেশী আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্য সাধারণত "২১ কর্ম দিবস" ফি ৪ হাজার২৫ টাকা, জরুরী "১০ কর্ম দিবস" ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা এবং অনেক বেশি জরুরী "২ কর্মদিবস" ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদী সাধারণ ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা জরুরী ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা অনেক বেশি জরুরী ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
এবং ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্য সাধারণত "২১ কর্ম দিবস" ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, জরুরী "১০ কর্ম দিবস" ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা এবং অনেক বেশি জরুরী "২ কর্মদিবস" ফি ১২ হাজার ৭৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদী সাধারণ ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা জরুরী ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা অনেক বেশি জরুরী ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
এই সবগুলো স্থির সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হবে। এছাড়াও ১৮ বছরের কম বয়সী এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা শুধুমাত্র ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট পাবেন। এবং অনেক বেশি জরুরী আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন সঙ্গে করে নিয়ে আসতে হবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে জেনে নিন। আমাদের দেশে বিভিন্ন পেশায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানিক দপ্তরে চাকরি করে দেশের বিভিন্ন শ্রেণী স্পেশাল লোক আর এইসব মানুষেরা যখন বিদেশ ভ্রমণের বা চিকিৎসার জন্য যেতে চায় তাদের ক্ষেত্রেও ঠিক কিভাবে পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়
আর তাদের পাসপোর্ট করার নিয়ম একটু আলাদা। আর এইসব চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট করার নিয়ম নিচে দেওয়া হল।
- সাধারণ মানুষদের থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য একটি ডকুমেন্টস বা কাগজ বেশি লাগে আর সেটি হচ্ছে এনওসি"NOC" (No Objection Certificate) অথবা"GO (Government Order) পেপারটি বেশি লাগে। তাছাড়া সমস্ত কাগজ পত্র গুলি একজন সাধারণ মানুষের মতোই লাগে।
- NOC: সরকারি কর্মচারী বা কর্মকর্তা তাদের ব্যক্তিগত কাজে বিদেশ সফর করার জন্য পাসপোর্ট এর আবেদন করলে তার বিভাগ অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তিপত্র সনদ "No Objection Certificate" সংগ্রহ করতে হবে।
- GO: হলো গভর্নমেন্ট অর্ডার বা সরকারি আদেশ সরকারি বা রাষ্ট্রীয় কোন কাজে দেশের বাইরে গেলে অথবা যাওয়ার জন্য সরকারি আদেশ"Government Order" পাসপোর্ট করার সময় দাখিল করতে হয়।
পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে
পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে জেনে নিন। পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে তা হলঃ পাসপোর্ট রিনিউ অথবা নবায়ন করার জন্য অবশ্যই অনলাইনে ই পাসপোর্ট ওয়েব সাইটে "www.epassport.gov.bd" এই লিংকে ঢুকে নতুন একটি পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হবে। আর এই সময় আপনাকে
অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে যে আপনার আগে একটি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অথবা ই পাসপোর্ট আছে এবং সেটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এর পরের কার্যক্রম গুলো হবে একটি নতুন পাসপোর্ট আবেদন করার মত ধাপে ধাপে সম্পন্ন করে নিতে হবে এভাবে আপনার পাসপোর্টটি পুনরায় রিনিউ হয়ে যাবে।
আমাদের বাংলাদেশের সকল জেলা বা বিভাগে পাসপোর্ট আবেদন বা সংশোধন রিনিউ এর জন্য যে আবেদন করে থাকে যাদের আগেকার এমআরপি পাসপোর্টগুলো রয়েছে তারা আবেদন করলে পুনরায় তা ই পাসপোর্টে পরিণত হয়ে যাবে।
আপনারা নিজেরাই অনলাইনে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার ফরম পূরণ করতে পারবেন পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সকল তথ্য অনুসারে পাসপোর্ট এর তথ্য প্রদান করা হয় এবং রিনিউ করার সময় আপনাদের অবশ্যই আগের পাসপোর্ট নাম্বার প্রদান করতে হবে আর উক্ত পাসপোর্ট নাম্বার প্রদান করলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য অটোমেটিক চলে আসবে। এক্ষেত্রে যদি কোন তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই পাসপোর্ট সংশোধনে আবেদন করতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদেশে যায় তাদের ভাগ্য বদলের জন্য আর এইসব রেমিটেন্স যোদ্ধারা শুধু তাদের নিজেদেরই ভাগ্য বদলায় না এরা আমাদের দেশেরও ভাগ্য বদলিয়ে দেয় আর এইসব ভাইদেরকে তাদের যথাযোগ্য সম্মান প্রয়োগ করা হোক এটাই আমাদের চাওয়া উক্ত তথ্যটি জেনে খুশি হয়ে থাকলে অবশ্যই প্রিয়জনদের সঙ্গে শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url